৬৭ কোটি ৪৩ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪২ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছর কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে হাইকোর্টের রায়ের ৬৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়।
এতে রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তার জামিন বাতিল করতে বলা হয়েছে। এ সময়ের আত্মসমর্পণ না করলে বিচারিক আদালতকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে বলেছেন হাইকোর্ট।
দুদক আইনের ২৭ (১) ধারা অনুসারে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। ওই অভিযোগে তার সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশের রায় দেন আদালত।
কিন্তু দুদক আইনের ২৬ (২) ধারায় করা মামলায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে তথ্য গোপনের অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দুদক এ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি।
এদিকে হাইকোর্টের রায় অনুসারে সাংসদ হাজী সেলিম ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন এবং এরপর তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করবেন। রায় প্রকাশের পর এমন তথ্য জানিয়েছেন তার আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
হাজী সেলিমের এই আইনজীবী বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ে হাজী মোহাম্মদ সেলিম সাহেবকে এক মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। হাজী মোহাম্মদ সেলিম সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে এক মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে সারেন্ডার করে সুপিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়ের করব।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছর কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। তবে তিন বছরের দণ্ড থেকে খালাস পান তিনি। বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান, হাজী সেলিমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী প্রয়াত আবদুল বাসেত মজুমদার ও আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান মনির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তামান্না ফেরদৌস এবং সাথী শাহজাহান।