ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় পুলিশের সাবেক উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ দিন ধার্য করেন।
এদিন আদালতে বাছিরের পক্ষে তার আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তিতর্ক শুনানি করেন। মিজানুরের পক্ষে যুক্তি দেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।
গত ২৪ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল যুক্তি উপস্থাপন করেন। আইন অনুযায়ী আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছিলেন তিনি।
এর আগে, গত ২৩ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। অভিযোগপত্রের ১৭ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য শুনেছে আদালত।
যুক্তিতর্ক শুনানির আগে ৩ জানুয়ারি আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন মিজানুর রহমান ও এনামুল বাছির। পরে ১২ জানুয়ারি মিজান ৬ পৃষ্ঠার এবং এনামুল বাছির ১২ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য আদালতে জমা দেন।
এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় ২০১৯ সালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মিজানকে।
এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক; এক হাত ঘুরে সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান কমিশনের তৎকালীন পরিচালক এনামুল বাছির।
সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা বাছির। এর পক্ষে তাদের কথপোকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি টেলিভিশনকে দেন তিনি। ওই অডিও প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা।
অভিযোগটি অস্বীকার করে বাছির দাবি তখন করেন, তার কণ্ঠ নকল করে ডিআইজি মিজান কিছু ‘বানোয়াট’ রেকর্ড একটি টেলিভিশনকে সরবরাহ করেছেন। অন্যদিকে ডিআইজি মিজান বলেন, সব জেনেশুনেই তিনি কাজটি করেছেন ‘বাধ্য হয়ে’।
এরপর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থার পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে তিনি অভিযোগপত্র দেন।
‘অবৈধভাবে সুযোগ প্রদানের হীন উদ্দেশ্যে’ এনামুল বাছির ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়ার কথা জানানো হয় অভিযোপত্রে।
গত বছর ১৮ মার্চ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ হয়।
ঘুষের অভিযোগ ওঠার পর তাদের দুজনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ২০২০ বছরের ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। আরেক মামলায় গ্রেপ্তার ডিআইজি মিজানকেও পরে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।