পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জালিয়াতি চেষ্টা: ৩ জন রিমান্ডে

বিচারকের ওপর হামলা মামলায় গ্রেফতার ৪, রিমান্ড চাইবে পুলিশ

চট্টগ্রাম আদালতের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলি উল্লাহকে চলন্ত গাড়ি দিয়ে ধাক্কা দিয়ে উল্টো তাকে মারধরের ঘটনায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানা গেছে।

এর আগে, গতকাল সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- রানা মরতুজা, মরতুজার বন্ধু শিশির মাহমুদ, গাড়িচালক আবদুর রহিম, মরতুজার বোন মাসুকা সুলতানা ও জিবান সুলতানা।

এদের মধ্যে রানা মরতুজা বেলজিয়াম প্রবাসী। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। তিনি চট্টগ্রামে বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। গতকাল রাতেই নগরের পাঁচলাইশ থানার জিইসি মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পাঁচলাইশ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান বলেন, মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে শিশির ছাড়া বাকি চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলার উদ্দেশে জানতে তাদের আদালতে হাজির করে পাঁচদিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

ঘটনার সূত্রপাত

জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টার দিকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলি উল্লাহ তার স্ত্রীকে নিয়ে নগরের জিইসি মোড়ের একটি কফি শপ থেকে বেরিয়ে হেঁটে গোলপাহাড় মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি ব্যক্তিগত গাড়ি বিচারককে ধাক্কা দেয়। তিনি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে গাড়িতে থাকা পাঁচজন নেমে তার ওপর হামলা করে। পরিচয় দেওয়ার পরও আসামিরা তাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল ও মারধর করে। স্বামীকে মারতে বারণ করলে স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করেন নারী আসামিরা। একপর্যায়ে বিচারক ও তার স্ত্রীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তারা। পরে পথচারীরা এসে তাদের উদ্ধার করেন। মারধরে বিচারকের একটি দাঁত ভেঙে যায়। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

হামলার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ

এদিকে বিচারকের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে মোহাম্মদ অলি উল্লাহর ব্যাচমেটদের সংগঠন বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস ফোরামের সভাপতি ছগির আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আসমা জাহান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিচারকের ওপর এমন কাপুরুষোচিত হামলা সমগ্র বিচার বিভাগের ওপরই আক্রমণের শামিল।

এমন আক্রমণে সব বিচারকের মনে বিচারকদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে এবং এই ঘটনায় ১১শ’ বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস ফোরামের সদস্যসহ সব পর্যায়ের বিচারকদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বিচারকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহবান জানানো হয় বিবৃতিতে।