চেক প্রতারণা মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ডটকম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন কুমিল্লার একটি আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর ১ম আমলী আদালতের বিচারক মাজহারুল হক এ আদেশ দেন। আদেশে এই দুজনকে আগামী ৩১ মে সংশ্লিষ্ট আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. ছোহরাব হোসেন ভূঁঞা (মিঠু)
এর আগে তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা চেক প্রতারণার অভিযোগে এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোর নম্বর যথাক্রমে কোতোয়ালি সি.আর -১৬১/২০২২ এবং কোতোয়ালি সি.আর ১৬২/২০২২।
ঘটনা বিবরণে জানা যায়, ইভ্যালি ডটকম নামীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান খুলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে বাজার মূল্যের অর্ধেক দামে মটর সাইকেল, গাড়ি বিক্রির অফার দিয়ে হাজার হাজার গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েকশত কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়।
পরবর্তীতে কথা মত গ্রাহকদের খরিদকৃত পণ্য ডেলিভারিতে অপারগতা প্রকাশ করে। ক্ষুব্দ গ্রাহকদের চাপের মুখে টাকা ফেরত দেবার কথা বলে ই-ভ্যালীর ঢাকার ধানমন্ডির প্রধান কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে গ্রাহকদের প্রদত্ত অফার মূল্যের সমপরিমাণ অংকের ব্যাংক চেক প্রদান করেন।
কুমিল্লার ভুক্তভোগী দুই গ্রাহকও ইভ্যালি ডটকম -এর প্রদত্ত ২২ লক্ষ টাকা ফেরত হিসাবে ৪টি ভিন্ন হিসাবের চেক প্রাপ্ত হয়ে ব্যাংকে নগদায়নের জন্য জমা দিলে চেক প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির হিসাব বন্ধ পায়।
এই বিষয়ে উল্লেখিত চেক প্রতারণার শিকার ও মামলার বাদী রাফসান আবেদীন রিফান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, এই দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের সাথে প্রতারণার দায়ে আসামিকে আইনের আওতায় আনাটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। ভবিষ্যতে যাতে আর এভাবে কেউ প্রতারণা করে জনগণের টাকা হাতিয়ে নিতে না পারে এই জন্য আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
প্রতারণার শিকার অপর মামলার বাদী শাহরিয়ার আবেদীন ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, সবাইকে তার অধিকার আদায়ে আইনের আশ্রয় নেয়ার ন্যায় সঙ্গত অধিকার আছে। সেই হিসাবে এই মোকদ্দমা দায়ের করেছি।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ছোহরাব হোসেন ভূঁঞা (মিঠু) মামলা দায়েরের পর ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমের সঙ্গে কথা বলার সময় জানান, আইনের প্রতিকার নিশ্চিত করার জন্যই আমাদের বিচার ব্যবস্থা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ আদালতে প্রতিকার প্রার্থী হতে হবে। আইনের কাছে কেউ প্রতিকার প্রার্থী না হলে সঠিক বিচার পাওয়ার প্রশ্ন আসে না।
মামলাটি সম্পর্কে এই আইনজীবী বলেন, চেক প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করার কোন সুযোগ প্রচলিত আইনে নেই। আসামিগণকে তাদের প্রদত্ত চেকের সমপরিমান বা দ্বিগুণ অথবা তিনগুণ অর্থ জরিমানাসহ কারাদণ্ডাদেশের বিধান এন আই এক্ট এর ১৩৮ ধারায় রয়েছে। এই মামলার মেরিট অনুযায়ী আসামিগণ আর্থিক জরিমানা ও দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত হবেন।