জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান আদালতের অবমাননা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কোর্ট হিলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দিন এ অভিযোগ করেন। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ হাশেম।
তিনি বলেন, কোর্ট হিলকে পরির পাহাড় বলতে নিষেধ আছে৷ কিন্তু ডিসি অফিসের আশপাশে অনেক ব্যানার ও পোস্টার রয়েছে। সেখানে পরির পাহাড় লেখা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শীপূর্ণ নেতৃত্বের প্রতি আমরা আস্থাশীল বিধায় জেলা প্রশাসকের অবৈধ কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় আইনি পথে হেঁটেছি। কিন্তু জেলা প্রশাসক এই আইনি মোকাবেলাকে দুর্বলতা মনে করেছেন, যা ভাবার সুযোগ নেই।
প্রশাসনের সঙ্গে বিচার বিভাগের অতীতের মতো সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে এএইচএম জিয়াউদ্দিন বলেন, পুরাতন আদালত ভবন ও কোর্ট হিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের একনায়কতন্ত্র ও দখলদারিত্ব কর্মকাণ্ড ইতিপূর্ব থেকে বিভিন্ন সময়ে হয়ে আসছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি সমিতির কোনো বক্তব্য না শুনে, সমিতির জায়গার দলিলাদি ও ভবনের অনুমোদন যাচাই-বাছাই না করে মিথ্যা পরিদর্শনের নাটক সাজিয়ে মনগড়া একটি তদন্ত প্রতিবেদন হাসিল করতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।
এলএ শাখাসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট। জনগণের ভোগান্তি দূর করতে কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি ডিসি। সমিতির জায়গা, স্থাপনা ইত্যাদি সংক্রান্তে জেলা প্রশাসন থেকে উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়সহ সরকার ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে সত্য গোপন করে গোপন প্রতিবেদনের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে করা হয়। জেলা প্রশাসক সিডিএর সচিব এবং প্রশাসনের বিভিন্ন ক্যাডারের মাধ্যমে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে সমিতির ভবনগুলো অনুমোদিত নয় মর্মে সিডিএ থেকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অব্যাহতভাবে চাপ দিয়ে আসছেন। আইনজীবী সমিতির ৫টি ভবনে সিডিএর অনুমোদন রয়েছে। এতে ব্যর্থ হয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে একটি একতরফা প্রতিবেদন নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। তাই চট্টগ্রামের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণকারী, বিদ্বেষ সৃষ্টিকারী ও মিথ্যাচারী জেলা প্রশাসককে চট্টগ্রাম থেকে প্রত্যাহার চাই।
তিনি বলেন, সম্প্রতি পুনরায় চট্টগ্রাম পুরাতন আদালত ভবনের সম্মুখভাগে সৌন্দর্যবর্ধনের নামে চলাচলের একমুখী রাস্তার অংশে এবং ভবনের পূর্বপাশের সামনের খোলা জায়গায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাতের অন্ধকারে বাগান নির্মাণ, ফুলের টব স্থাপনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকে ব্যবহার করে জেলা প্রশাসক পুরাতন আদালত ভবনের সম্মুখস্থ উন্মুক্ত চত্বরে ব্যারিকেড দিয়ে যান ও জন চলাচলের পথ সংকুচিত করেছেন। যার ফলে প্রতিনিয়তই আদালতে ঢুকতে ও বের হতে যানজট লেগে থাকে।
আদালত ভবন এলাকায় আনসার ব্যাটেলিয়নের সদস্য এনে নিরাপত্তার নামে বরিশালের মতো ঘটনা সৃষ্টির পাঁয়তার করছেন জানিয়ে জিয়াউদ্দিন বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি সমিতির কোনো বক্তব্য না শুনে, সমিতির জায়গার দলিলাদি ও ভবনের অনুমোদনপত্র যাচাই বাছাই না করে মিথ্যা পরিদর্শনের নাটক সাজিয়ে মনগড়া একটি তদন্ত প্রতিবেদন হাসিল করতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিললের সাবেক সদস্য ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, বর্তমান সদস্য মুজিবুল হক, চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি রতন কুমার রায়, বর্তমান সিনিয়র সহ সভাপতি মো. শফিক উল্লাহ, সহ-সভাপতি মো. আজিজুদ্দিন হায়দার, সহ-সাধারণ সম্পাদক এরশাদুর রহমান রিটু, অর্থ সম্পাদক সালাউদ্দিন মনসুর রিমু, পাঠাগার সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক লাইলা নুর, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. মেজবাহ উদ্দিন, নির্বাহী সদস্য এএনএম রুকনুজ্জামান মুন্না, শ্যামল চৌধুরী, সেলিনা আকতার, মো. খোরশেদ কামাল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আইনুল কামাল, বিলকিছ আরা মিতু, মিনহাজ উদ্দিন, তৌহিদুল বারি চৌধুরী, তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ।