মাস্ক না পরায় একুশে বইমেলায় মডেল-অভিনেত্রী নাজিফা তুষিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি মনে করলে আইনি প্রতিকার চাইতে তাঁকে যথাপোযুক্ত আদালতে যেতে পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্ট। আদেশে বলা হয়েছে, ‘যদি ওই নারী মনে করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দণ্ডটি আইন অনুযায়ী হয়নি, তাহলে সে উপযুক্ত আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।’
আজ মঙ্গলবার (১ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ কথা বলেন।
একইসঙ্গে তুষিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ৭ দিনের মধ্যে অপসারণ করতে বলেছেন আদালত। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারি পক্ষের আইনজীবী বদরুদ্দোজা বাবু। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা ই রাকিব।
আদালতে শুনানির সময় বইমেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা রানী কর্মকারের সঙ্গে তর্কে জড়ানো মডেল ও অভিনেত্রী নাজিফা তুষির সেই ভাইরাল ভিডিওটি হাইকোর্ট বেঞ্চকে দেখান রিটকারী আইনজীবী বদরুদ্দোজা বাবু। এসময় আদালত আইনজীবীর মোবাইলে থাকা ভিডিওটি দেখেন।
এর আগে রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জরিমানা করার ঘটনা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন নাজিফা তুষি। তার পক্ষে অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা বাবু রিটটি দাখিল করেন।
প্রসঙ্গত, মাস্ক না পরে বইমেলায় ঘোরাঘুরি করায় ২০ ফেব্রুয়ারি নাজিফা তুষিকে দুইশ টাকা অর্থদণ্ড দেয় ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা রানী কর্মকারের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময়ের ভিডিওটি পরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
সে ভিডিওতে দেখা যায় দণ্ড দেওয়ার আগে নির্বাহী হাকিমের সঙ্গে তর্ক করছেন তুষি। টেলিভিশন সাংবাদিকরা ঘটনার ভিডিও ধারণ করলে উত্তেজিত হয়ে তিনি হাকিমকে বলেন, তাকে জনপরিসরে কেন ‘হেনস্তা’ করা হচ্ছে?
এ সময় মনীষা রানী কর্মকার বলেন, ‘এটা একটি আদালত পরিচালনা হচ্ছে, এটা কোনো শুটিং নয়। আপনি স্বাস্থ্যবিধি মানছেন কি না, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমরা সেটা দেখছি। আপনাকে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারা অনুযায়ী ২০০ টাকা অর্থদণ্ড দিচ্ছি।’
পরে মাস্ক না পরার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে অর্থদণ্ড পরিশোধ করেন তুষি।