বিচারক ও পুলিশ ‘হত্যার পরিকল্পনা’র অভিযোগে বাহরাইন ফেরত এক প্রবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মনির আব্দুল রাজ্জাক নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিসিসিটি)।
আজ রোববার (৬ মার্চ) মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সিসিসিটির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ এই তথ্য জানায়।
সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মনির আব্দুল রাজ্জাক নামের ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন বাহরাইনে ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে সম্প্রতি তিনি গোপনে দেশে ফেরেন।
তিনি বলেন, ‘প্রবাসে থাকা অবস্থায় তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় উগ্র মতবাদ ও বিভিন্ন পোস্ট, ভিডিও দেখে রেডিক্যালাইজড হয়। পরে সে ফেইক ফেইসবুক আইডি খুলে নিজের পরিচয় গোপন করে একটি ধর্মীয় উগ্র মতবাদী সংগঠনে যোগ দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করে পোস্ট দেয় এবং অন্যদেরকেও এই জিহাদে যোগদানের আহ্বান জানায়।’
শনিবার রাতে ঢাকার ফকিরাপুল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন সিসিসিটি সদস্যরা। সে সময় মনিরের কাছ থেকে নয়টি মোবাইল সিম কার্ড এবং একটি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে।
মনির আব্দুল রাজ্জাক ২০০৭ সালে প্রথমে বাহরাইনে যান এবং একটি নির্মাণ কোম্পানিতে শ্রমিকের কাজ নেন। ২০১৮ সালে বাহরাইন থেকে দেশে ফিরে দুই মাস পরে আবার ফিরে যান মনির। এরপর থেকে প্রবাসে বসেই তিনি ফেসবুকে ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে অনলাইনে জঙ্গিবাদ ছড়াচ্ছিলেন এবং রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানায় সিটিসিসি।
তিনি বলেন, মনির বাংলাদেশের বিচারক এবং পুলিশ বাহিনীকে টার্গেট করে ফেসবুকে পোস্ট দেন এবং তাদের ওপর হামলার পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাহরাইন থেকে দেশে ফিরে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।
মনির ফেসবুকে কী ধরনের পোস্ট দিতেন, তার কিছু নমুনা সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। তার একটিতে বলা ছিল- ‘কয়েকটা বিচারক আর পুলিশ নিধন করলেই আমাদের সোনার বাংলা আবার ফিরে পাব।’
মনিরের কিছু সহযোগী আছে জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তারা হামলার জন্য রেকিও করেছিল, কিন্তু হামলার আগেই মনির গ্রেপ্তার হয় এবং বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মনির নিজেই উদ্বুদ্ধ হয়ে উগ্র মতবাদে জড়িয়েছেন, দেশের কোনো জঙ্গি সংগঠনের কারও সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়নি। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রমনা থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান।