চট্টগ্রামের সাতকানিয়া চৌকি আদালত অবমাননা এবং সাতকানিয়া আইনজীবী সমিতিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদানের অভিযোগে লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিনকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে আইনজীবীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় আদালত সড়কে সাতকানিয়া আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করার দায়ে শোকজের মুখোমুখি হয়েছেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চরম্বা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা হেলাল উদ্দিন। পরে তিনি সাতকানিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্তে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করলেও পরে চরম্বায় এক ওয়াজ মাহফিলে আদালতের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়ে কটাক্ষ করে বক্তব্য রাখেন।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে তিনি বলেন, আমি কিন্তু অন্যায় করিনি। জজকোর্টের যে জজ শোকজ করেছে, সে অন্যায় করেছে। তার অর্ডারে (দোকানে) তালা লাগানোর অর্ডার নেই। যে তালা লাগিয়েছে, সে আমার বিরুদ্ধে পিটিশন দিলে আপনি এগুলো দেখেননি। আপনি কীসের জজগিরি করেন! আমি ঢাকায় কথা বলেছি। জজকোর্টে গিয়ে একটি পিটিশন দিলে তার (জজের) বারোটা বাজবে।
বিচারকের উদ্দেশে চরম্বা ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা হেলাল উদ্দিনের ওই বক্তব্যের তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে সাতকানিয়া আইনজীবী সমিতি। তার অপসারণের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে সাতকানিয়া আইনজীবী সমিতি।
সাতকানিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও অ্যাডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী কচির জানান, ওই ইউপি চেয়ারম্যান আদালতের আদেশ অবমাননার পর কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে ওয়াজ মাহফিলে বিচারক ও আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে উসকানিমূলক, অশালীন বক্তব্য রেখে আদালত ও আইনজীবীদের অসম্মান করেছেন। দেশের আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।
এদিকে গতকাল বুধবার (৯ মার্চ) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে আদালতের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্য অনিচ্ছাকৃত ও ভুল বলে স্বীকার করে বিচারক, আইনজীবী ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা হেলাল উদ্দিন।
এ সময় তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার চরম্বায় একটি ওয়াজ মাহফিলে সাতকানিয়া সহকারী জজ আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুলবশত মন্তব্য করেছি, যা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল আর হবে না।