রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে আমদানিকৃত ভোজ্যতেল, চিনি ও ছোলার ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সচিবালয়ের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জিনিসের দাম যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে, সেজন্য যেসব পণ্যের ওপর ভ্যাট ছিল সেগুলো তুলে নিয়েছি। সরকার থেকে যে সহযোগিতা প্রয়োজন সেটা পূর্ণ মাত্রায় করা হচ্ছে। পাশাপাশি টিসিবি আমাদের সব সময় লাগে না বা প্রয়োজন সারা বছর থাকে না। মাঝে-মধ্যে প্রয়োজন দেখা দেয়। প্রয়োজন দেখা দিলে সরকারকে ফ্লেক্সিবল অবস্থায় থাকতে হয়। কারণ যখন যেটা প্রয়োজন দেখা দেয় তখন সেটা আনার ব্যবস্থা করতে পারে। তাই বলতে পারি সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার করছি। ইনশাল্লাহ আমরা কথা দিতে পারি।
কোন কোন পণ্যের ভ্যাট তুলে নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ভ্যাট তুলে নেওয়া হয়েছে। মূলত আমাদের রমজান মাসে যেসব পণ্য বেশি প্রয়োজন সেসব পণ্যের ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। কারণ সবাই এগুলো ভোগ করে। ভোজ্যতেল সয়াবিনের উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
টিসিবি অনেকগুলো পণ্য কিনবে, কেন কেনা হচ্ছে পরিকল্পনা কি জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা টিসিবির জন্য জিনিসপত্র কিনতে যাচ্ছি। টিসিবি আমাদের অর্থনীতির ব্যাংকও। একদিকে আমাদের যেমন পণ্য দরকার, পণ্যের স্টক দরকার। তেমনি এ পণ্যগুলো যারা ব্যবহার করবে তাদের কাছে। সময় মতো এবং ন্যায্যমূল্যে পৌঁছানো দরকার। আমরা সে কাজটি করছি।
ভ্যাট প্রত্যাহারে চিঠি
এর আগে ভোজ্যতেলের বাজার সামলাতে ভ্যাট তুলে নেওয়ার ইঙ্গিত দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোজ্যতেলের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে চিঠি দিয়েছিল এনবিআরকে।
ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই বুধবার (৯ মার্চ) নিত্যপণ্যটির ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার নিয়ে ‘কাজ চলছে’ জানিয়ে এনবিআর সদস্য (ভ্যাট নীতি) জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে ভোজ্যতেলের চলমান পরিস্থিতিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। আমরা এখন বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।’
গত সোমবার (৭ মার্চ) বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন তিন মাসের জন্য ভোজ্যতেলে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান। সেই সঙ্গে সরকারের হিসাব রাখতে বন্ডের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তেল দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রতিবেশী দেশ ভারত তিনবার শুল্ক ও ভ্যাট সমন্বয় করেছে। বাংলাদেশেও ভ্যাট প্রত্যাহার করা উচিত বলে মনে করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
উল্লেখ্য, হুহু করে বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। অভিযান চালিয়েও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না বাজার। সরকার-নির্ধারিত দর খোলা তেল ১৪৩ আর বোতলজাত ১৬৮ টাকা কোনো কাজেই আসছে না বাস্তবে। বাজারে তেলের দাম ছুঁয়েছে ১৮০ টাকা।