চাঁদাবাজির মামলায় আসামির জামিন আবেদনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইনফরমেশন স্লিপ দাখিলের ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার প্রেক্ষিতে ফরিদপুর কোর্টের আইনজীবী মশিউর রহমানকে সতর্ক করে ক্ষমা করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে এ ঘটনায় পার পাননি মামলার তদবিরকারী মো. সুরুজ্জামান। তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছেন আদালত।
আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আজ রোববার (১৩ মার্চ) বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শামীম খান, এ কে এম নুরুন্নবী সুমন। আসামির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সফিউল্লাহ হায়দার।
এর আগে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইনফরমেশন স্লিপ দাখিল করায় ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বরকত ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান ও মামলার তদবিরকারী মো. সুরুজ্জামানকে তলব করেন হাইকোর্ট।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এ দুজনকে তলব করে আদেশ দেন আদালত। আদেশে তাদেরকে হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
জানা গেছে, সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বরকতের জামিন আবেদনের সঙ্গে একটি ইনফরমেশন স্লিপ দাখিল করা হয়। ফরিদপুর জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মশিউর রহমানের স্বাক্ষরিত ইনফরমেশন স্লিপে বলা হয়, চাঁদাবাজির ঘটনায় আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ ফরিদপুরের আদালতে আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার তথ্য আদালতে দাখিল করেন। জামিন শুনানির সময় বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিগোচর হলে তাদের তলব করেন।
মামলায় অভিযোগ থেকে আইনজীবীরা জানান, ব্যবসায়ী ও কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম চৌধুরীর কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন দুই ভাই। চাঁদা দিতে না চাইলে ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর রাতে বরকত-রুবেলের নেতৃত্বে হাতুড়ি বাহিনীর ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তার প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা তাকে, তার ছেলেকে এবং গাড়িচালককে মারধর করে সোয়া পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যায়। ঘটনার প্রায় এক বছর পর ২০২০ সালের ১২ জুন এ ঘটনায় মামলা করেন শামসুল আলম।
এর আগে ফরিদপুর শহরের গোলচামত এলাকায় জনৈক সুবল চন্দ্রের বাড়িতে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৭ জুন শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে সাজ্জাদ, রুবেলসহ নয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনসহ বিভিন্ন মামলা হয়।
এর মধ্যে সিআইডি পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে গত ২৬ জুন রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করেন। মানি লন্ডারিংয়ের ওই মামলায় দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আনুমানিক দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।