বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরসহ দর্শনীয় স্থানসমূহে দর্শনার্থীর চলাচল নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে আইনি (লিগ্যাল) নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। এসব স্থানে সরেজমিনে পরিদর্শন করে ই-টিকেটিং ব্যবস্থায় ভোগান্তির বিষয়টি পরিলক্ষিত হওয়ায় উত্তরণে তিনটি প্রস্তাব করা হয়েছে নোটিশে।
আজ সোমবার (১৪ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিংকন বৃহত্তর জনস্বার্থে এ নোটিশ প্রেরণ করেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালককে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে যা বলা হয়
প্রত্যেকটি দেশের জাতীয় জাদুঘর সেদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। দেশের সমৃদ্ধ অতীত জানতে হলে জাতীয় জাদুঘরসহ দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনাগুলো দেখা এবং সেগুলো সম্পর্কে জানা একান্ত আবশ্যক।
দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে সমৃদ্ধ অতীতের ধারক-বাহক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের জাতীয় জাদুঘরসহ অনেক স্থাপনা। দেশী-বিদেশী দর্শনার্থীদের কাছে শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘর অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শনের জন্য ইতোপূর্বে জাদুঘর সংলগ্ন গেট থেকে টিকিট সংগ্রহ করার সুযোগ ছিল। জাদুঘর খোলা থাকাকালীন সময়ে গেট সংলগ্ন বুথ থেকে টিকেট সংগ্রহ করে যে কেউ জাদুঘর পরিদর্শন করতে পারতেন।
প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ছোঁয়ায় জাদুঘর পরিদর্শনের জন্য ম্যানুয়েল টিকিটের পরিবর্তে ই-টিকেটিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে যা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো এই পদ্ধতিতে টিকেট সংগ্রহের বিষয়টি না জানার কারণে অনেকক্ষেত্রে দর্শনার্থীদের ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে হয়। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে বিভিন্ন কম্পিউটার দোকান থেকে অধিক মূল্যে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। ফলে প্রচুর সংখ্যক দর্শনার্থী এভাবে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।
ভোগান্তি উত্তরণে ৩ প্রস্তাব
- জাদুঘর সংলগ্ন গেটে কর্তৃপক্ষকে পর্যাপ্ত সংখ্যক অনলাইন বুধ স্থাপন করে ই-টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পাশাপাশি ম্যানুয়েল টিকিটিং ব্যবস্থা চালু রাখা যেতে পারে। যাতে করে ই-টিকিট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ডিভাইস সংক্রান্ত কোন জটিলতা দেখা দিলেও দর্শনার্থীদের টিকিট পেতে সমস্যা না হয়।
- নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আগত সকল দর্শনার্থীর জন্য জাদুঘর উন্মুক্ত রাখা, এবং
- জাদুঘরসহ দেশের অন্যান্য দর্শনীয় স্থাপনা পরিদর্শনের জন্য দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং টিকিট কালোবাজারি রোধে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
প্রস্তাবিত এসব ব্যবস্থাসহ প্রযোজ্য আরও যে যে ব্যবস্থা দর্শনার্থীদের অবাধ পরিদর্শনের জন্য গ্রহণ করা যায় তা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয় নোটিশে। নোটিশ প্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বৃহত্তর জনস্বার্থে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
নোটিশ প্রেরণের বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান লিংকন। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু একটি উদ্যোগ তখনই সফল বলা যায় যখন তা হয় ভোগান্তি ও জটিলতামুক্ত।
নোটিশ প্রেরণকারী আইনজীবী মনিরুজ্জামান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, আমি নিজে সরেজমিনে গিয়ে ই-টিকিটিং ব্যবস্থায় দর্শনার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি দেখেছি। এজন্য এসব উত্তরণে সম্ভাব্য প্রস্তাবনা নোটিশে উল্লেখ করেছি।
তার প্রস্তাবিত উপায়গুলোসহ দর্শনার্থীদের অবাধ পরিদর্শন নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের প্রযোজ্য অন্য যেকোন যথোপযুক্ত পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাবেন বলেও ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।