কক্সবাজারে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক আইনজীবী। সিটি স্ক্যান প্রতিবেদন ভুলের কারণে সঠিক চিকিৎসাসেবা না পেয়ে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে এ মামলা করেন তিনি।
কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত আবুল মনসুর সিদ্দিকীর আদালতে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) এ মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী অ্যাডভোকেট মিনারুল কবির আল আমিন। তিনি কক্সবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের লাইট হাউজ পাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত মৌলানা আলমগীরের ছেলে।
মামলার আসামি দুই চিকিৎসক হলেন- ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতালের পরিচালক ডা. শাহ আলম এবং রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ ডা. ওসমানুর রশীদ।
বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ ইমরুল কায়েস বলেন, যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিটি স্ক্যান রিপোর্ট পাওয়া যেত তবে, অকালে আমার মক্কেলের বাবার মৃত্যু হতো না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা আর দায়িত্বহীনতা এর জন্য দায়ী।
মামলার এজাহারে যা বলা হয়
গত বছরের ৬ অক্টোবর সকালে তার পিতা মৌলানা আলমগীর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়। পরে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি সিটি স্ক্যান করে রিপোর্ট দেখার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক সৌরভ। কিন্তু হাসপাতালের সিটি স্ক্যান সেবা না পেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতালে নিয়ে সিটি স্ক্যান করা হয়। বিকেল অনুমানিক তিনটার দিকে ডা. ওসমানুর রশীদ স্বাক্ষরিত একটি রিপোর্ট দেন তারা।
রিপোর্টে বাদীর অসুস্থ পিতার গুরুতর কিছু হয়নি, ব্রেইনে কোন সমস্যা নেই বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু তারপরও বাদীর পিতার সুস্থতার কোনো লক্ষণ নেই দেখে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও আইসিইউতে ভর্তি দিয়ে সিটি স্ক্যানসহ বেশকিছু পরীক্ষা দেন চিকিৎসক। পরীক্ষার রিপোর্ট পেয়ে জানা যায় রোগীর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এরপর চট্টগ্রাম থেকে রোগীকে ঢাকা রেফার করা হলে সেখানেও একই পরীক্ষা দেয় চিকিৎসকরা। অথচ কক্সবাজারের বেসরকারি হাসপাতাল আল ফুয়াদের প্রতিবেদনে কোন অসুস্থতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এতে যথাযথ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন রোগী।
এ বিষয়ে মামলার বাদী আল আমিন বলেন, আল ফুয়াদের ভুল রিপোর্টের কারণে সঠিক সময়ে যথাযথ চিকিৎসা পাননি আমার বাবা। পরে আমার বাবাকে আরো উন্নত চিকিৎসা সেবা নিতে ঢাকার শেরে বাংলা নিউরো মেডিকেল সাইন্স হাসপাতালে রেফার করে। সেখানেও একই পরীক্ষা করা হয়। তাদের রিপোর্টেও মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। তবে যথাসময়ে এ বিষয়টি ধরা পড়লে বাবাকে বাঁচানো যেত। এটি মূলত আল ফুয়াদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর লোভের কারণে হয়েছে।