দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন গত ১৫ ও ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুইদিন ব্যাপী এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলেও এখনো আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। এরই মধ্যে নিজেকে সমিতির সভাপতি দাবি করে হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মঙ্গলবার (২২ মার্চ) এই রিট করেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ। তিনি সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
রিটে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইন-২০১১ এর ধারা (৪) কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
রুলে সরকারি দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত (বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ) সাদা প্যানেলে সভাপতি পদে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও বিএনপি সমর্থিত (জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম) নীল প্যানেলে সভাপতি পদে ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদলের প্রার্থীতা কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে আর্জি জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দকে কেন সভাপতি ঘোষণা করা হবে না রুলে তাও জানার নির্দেশনা চেয়ে আর্জি জানানো হয়েছে।
রিটে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, বার কাউন্সিলের সচিব, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোশিয়েশন) নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোশিয়েশন) নির্বাচনে সভাপতি পদে বিজয়ী প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, অপর প্রার্থী ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল ও ব্যারিস্টার তানিয়া আমীরকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটের বিষয়টি গণমাধ্যমকে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ নিজেই নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রিট করেছি সভাপতি’র ভোট গণনার জন্য। এছাড়া দুই দলের (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত) সভাপতি প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল চেয়েছি।
অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী বলেন, রিটে আমাকে সভাপতি ঘোষণা করার জন্য নির্দেশনা চেয়েছি। সেই সাথে ৭৫টি বারের আইনজীবী যারা হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করেনা তাদের ভোটার করায় বার কাউন্সিল আইন ২০১১ এর ধারা ৪ বাতিল চেয়েছি।
এই আইনজীবী আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনী আচরণবিধি-৯ অনুযায়ী কোনো প্যানেল-প্রার্থী পরিচিতি ইত্যাদি তৈরি, প্রচার ও বিলি করা যাবে না।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনী আচরণবিধি-২০০১ অনুযায়ী ভোটারদের কোনো ধরনের খাবার দেওয়া যাবে না। দলীয় শোডাউন, মিছিল-মিটিং করা যাবে না। ভোটের দুইদিন কোনো প্রচার ও প্রচারণা করা যাবে না।
ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ‘এসব বিধি লঙ্ঘন করার পর আমি দুই দলের দুজনের প্রার্থীতা বাতিলের জন্য গত ৩ মার্চ প্রথমে, এরপর পর্যায়ক্রমে গত ১৩, ১৫, ১৭ এবং ২০ মার্চ পাঁচটি আবেদন জমা দিলেও সেটি বিধি অনুযায়ী আমলে নেন নাই।’
তিনি রিটে উল্লেখ করেন, এই দুইজনের সভাপতি পদের প্রার্থীতা বাতিল করলে আমি সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিনে পাঁচ হাজার ৫৯১ আইনজীবী ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোটগ্রহণ শেষে এখন অপেক্ষা ফলাফল ঘোষণার। তবে সম্পাদক পদের ভোট পুনরায় গণনার দাবিতে এক প্রার্থীর আবেদন এবং বারের নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক পদত্যাগ করায় ফলাফল ঘোষণায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।