প্রেমের সম্পর্কের জেরে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় স্কুলছাত্র সানাউল্লা সরকার হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে দণ্ডিত সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৫ জন এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন ২ আসামি।
আজ মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ রায়ের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। এ মামলায় সব আসামি খালাস পাওয়ায় রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপিল আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় মোট ৯ জন আসামি হলেও দুইজন মারা যাওয়ায় এখন আসামির সংখ্যা ৭ জন। হাইকোর্টে আপিল বিচারাধীন থাকাবস্থায় এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর এক আসামি মারা যান।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আনোয়ারা বেগমের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ও পারিবারিক বিরোধের জেরে উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে সানাউল্লা সরকারকে ২০০১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করে।
এরপর বিচার শুরু হলে দীর্ঘ শুনানি ও উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক ফজলে এলাহী ভূঁইয়া রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে সব আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম, আতিকুল ইসলাম, আলম শেখ, সেলিম শেখ, নয়ন শেখ ও আনার হোসেন শেখ। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন- আনোয়ারা বেগম, আব্দুল মোতালেব ও শেখ শামসুদ্দিন।
পরে নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা জেল আপিল ও আপিল আবেদন করেন। বিচারিক আদালতে রায়ের পর সাজাপ্রাপ্ত আনোয়ারা বেগম ও আলম শেখ মারা গেছেন।