স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করেছিলেন এক নারী। তবে বিচারকের মধ্যস্থতায় পারিবারিক সে দ্বন্দ্বের শান্তিপূর্ণ মীমাংসা হয়েছে। শুনানি শেষে সন্তানসহ স্বামীর সিএনজি অটো রিক্সায় করে স্বামীর বাড়ি ফিরেন মামলার বাদী নাছিমা আক্তার (২৫)। নোয়াখালীর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে সোমবার (১৬ মে) এই দৃশ্যের অবতারণা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানাধীন আমকি সাকিনস্থ নাছিমা আক্তার গত এপ্রিল মাসে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট -৭ নং আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মোঃ মুহিব্বুল্লাহ মামলা আমলে নিয়ে আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেন (৩১) কে সমন দেন।
সমন পেয়ে আসামী সোমবার আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে শুরুতে বাদীপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। পরে আদালত বাদিনীর বক্তব্য জানতে চান। বাদিনী তার বক্তব্যে আসামীর সাথে সংসার করার ইচ্ছা পোষণ করেন। আসামীও তাতে সায় দেন। পরে জামিন পেয়ে আদালতের বারান্দায় স্বামী-স্ত্রী দুইজনকেই বেশ হাসিমুখে তাদের কন্যা সন্তানের সাথে বসে গল্প করতে দেখা যায়।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাদিনী নাছিমা আক্তার বলেন, ‘আদালত আমাদের দুইজনকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবার জন্য ২ ঘণ্টা সময় দেন, আমরা একসাথে বসে আলোচনা করে সংসার করার সিদ্ধান্ত নিলে আদালত আমাদের মিলিয়ে দেন, আমি সন্তান নিয়ে স্বামীর সংসার করতে চাই, আমার স্বামী ভালভাবে চললে আমার আমার আর কোন কষ্ট থাকবেনা।’
স্বামী মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভুলবুঝাবুঝিতে এই মামলা হয়, বিগত ছয় মাস যাবত আমি আমার সন্তানকে দেখতে পাইনি, আমার স্ত্রী ফাজিল পাস, আমি সিএনজি চালাই, যৌতুক আমি চাইনি’। হাতে রাখা চিপস আর লিচু কার জন্য এনেছেন জিজ্ঞেস করলে লাজুক আনোয়ার বলেন- ‘চিপস মেয়ের জন্য আর আমার স্ত্রী লিচু পছন্দ করে।’
এই বিষয়ে আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু হানিফ বলেন, ‘এমন অনেক মামলা থাকে যেখানে দুইপক্ষ থেকে কিছু ছাড় দিলে শান্তিপূর্ণ মীমাংসা সম্ভব। বিশেষ করে দাম্পত্য বিষয়ক ফৌজদারি মামলায় এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবার বিবেচনায় রাখা উচিত।’
আসামী ও বাদিনী স্বামী-স্ত্রীর সন্তানসহ পুনর্মিলনের প্রাণোচ্ছল এইক্ষণ আনন্দের পরশ বুলিয়ে যায় আদালতে উপস্থিত সবার মনে। এই দম্পতিও সবার কাছে দোয়া চান।