এ আর রহমানের সুর এবং কারার ঐ লৌহকপাট বিতর্ক
অ্যাডভোকেট তানজিম আল ইসলাম

সুপ্রিম কোর্টের নতুন ভবনে আইনজীবী-বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে ৩ সুপারিশ

তানজিম আল ইসলাম: সুপ্রিম কোর্টের নতুন ভবন- বিজয়-৭১ এ আদালত কার্যক্রম গতকাল থেকে শুরু হয়েছে। এই ভবন থেকে বাইরের দৃশ্যাবলি দেখে পুলকিত হতেই হয়। তবে এই পুলকিত হবার সাথে মনে বড় শংকা জাগে। এই অগোছালো ভবনটি নকশা করার সময় আইনজীবী নেতৃবৃন্দের কোন মতামত নেয়া হয়েছিল কিনা জানিনা। আদালতকে কিন্তু যেকোন সরকারি অফিসের স্থাপনার সাথে মিলালে হবেনা।

আদালতে সরাসরি বিচারপ্রার্থী তথা তাদের প্রতিনিধি আইনজীবীদের পদচারণা থাকে। একজন বিচারপ্রার্থীর ন্যায়বিচারের জন্য তারা দিনের মূল সময়টি কাটায় আদালতে আদালতে। যেহেতু একজন আইনজীবীকে অনেকগুলো আদালতে অক্লান্ত ছুটতে হয় তাই তাদের সুবিধার কথা সর্বাগ্রে চিন্তা করে আদালত ভবনের নকশা, স্থাপনা তৈরি করা উচিত।

আদতে আদালতে আইনজীবীর মাঝে বিচারপ্রার্থীই ছুটে বেড়ায়। আর সশরীরে বিচারপ্রার্থীরাতো আসেনই। বিজয়-৭১ ভবনের নামকরণ এবং এর উপর তলা থেকে যে ভিউ দেখে তেজদীপ্ত হয়েছি ঠিক ততটাই নেতিয়ে পড়েছি, হতাশ হয়েছি এই ভবনে অবস্থিত কোর্টগুলোতে এটেন্ড করা কতটা দুঃসহ হয়ে দাঁড়াবে এই ভেবে। বিশেষ করে সিনিয়র আইনজীবীদের কতটা ভোগান্তি হবে তাই ভাবছি। এছাড়া মাননীয় বিচারপতিদের প্রাইভেসিও নষ্ট হবার উপক্রম হয়েছে। আদালতে বারান্দায় বিচারপতি আর আইনজীবীদের সচরাচর দেখা হওয়াটা ঠিক শোভনীয় নয়।

যারা নকশা প্রনয়নের দায়িত্বে ছিলেন সম্ভবত তারা আদালত আর অন্যান্য সরকারি অফিসের পার্থক্যটা বুঝতে পারেননি। তবে বিস্ময়ের বিষয় এখানে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাগণের কি কোন মতামত নেয়া হয়নি? নেয়া হলে তো এমন হতো না। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় বারের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের কোন মতামত কি নেয়া হয়েছিল? আদতে কি প্রয়োজন মনে করেছিলেন? আর দুঃখজনক হলেও সত্য বারের গত কয়েক বছরের কর্মকান্ডে আর মনে হয়না কোন কর্তৃপক্ষ বারের অপিনয়ন নেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবেন।

এখন যেহেতু ভবনটি হয়েই গেছে, বিচারপ্রার্থীদের স্বার্থে কয়েকটি সুপারিশ রাখতে চাই। ১. নতুন ভবনে শুধু সিভিল সিংগেল বেঞ্চ,ডেথ রেফারেন্সে এবং শুনানির বেঞ্চগুলো স্থানান্তর করা হোক। ২. কোন মোশন বেঞ্চ নতুন ভবনে না রাখা ৩. এনেক্স ভবনের ৪ তলা থেকে বিভিন্ন প্রশাসনিক অফিস নতুন ভবনে সরিয়ে ৪ তলায় নতুন আদালত স্থাপন করা। আশা করি এতে করে ভোগান্তি কিছুটা লাঘব হবে।

লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট।