ভুয়া নিয়োগপত্র: রিট করে ফাঁসলেন ৩৪ আবেদনকারী
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী

ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি পেলেন ৫ ডিসি

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা অমান্য করায় ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী পাঁচ জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। তলবে হাজির হওয়া ৫ জেলার ডিসিকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার (১৭ মে) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মহি উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একইসাথে আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য দুই সপ্তাহ পর দিন নির্ধারণ করেছেন।

আদালতে ডিসিরা জানান, অবৈধ ভাটার ৯৫ শতাংশ বন্ধ করতে পেরেছেন। এরপর আদালত মৌখিকভাবে জানানো তথ্য আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য বলেন। এছাড়া অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার পর পরিবেশ সুরক্ষায় বন্ধ করে দেওয়া ইটভাটা যেন বন্ধই থাকে বলে ঢাকাসহ ৫ জেলার ডিসিদের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। পরে আদালত ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীর জেলা প্রশাসককে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।

আদালতে এদিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তিনি জানান, হাইকোর্টকে ডিসিরা জানান— ৫ জেলার ৪১১টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ৩১৪টি বন্ধ করা হয়েছে। বাকিগুলোর মামলা চলছে অধস্তন ও উচ্চ আদালতে। এসময় রিটকারী আইনজীবী বলেন, বৃষ্টির কারণে মে মাস পর্যন্ত এমনিতেই ইটভাটা বন্ধ থাকে। অক্টোবর থেকে মে পর্যন্ত আবার চলে। অবৈধ ইটভাটার সাথে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার কথা বলেন তিনি।

এর আগে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী ৫ জেলার ইটভাটা বন্ধে ব্যর্থতার বিষয়ে হাইকোর্টের তলবে ব্যাখ্যা দিতে ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ডিসি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আদালতে উপস্থিত হন।

ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে উল্লিখিত পাঁচ জেলার অবৈধ ইটভাটার তালিকা করে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিলেন।

একইদিন পাঁচ জেলার ডিসি এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ব্যক্তিগতভাবে জুম আইডির মাধ্যমে ভার্চুয়ালি আদালতে যুক্ত থাকতে বলা হয়েছিলো। সেদিন তারা আদালতে উপস্থিত হলেও তাদের পক্ষে এফিডেভিট আকারে দাখিল করা প্রতিবেদনে দেখা যায়, আদালতের আদেশ সঠিকভাবে প্রতিফলন হয়নি। এ কারণে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা শুনতে তাদের আবারও তলব করেন হাইকোর্ট।

পেছনের কথা

এর আগে ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ বন্ধে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়। আবেদনে ঢাকার বর্তমান দূষণের মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ের অবস্থান ও অবৈধ ইটভাটা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে চার দফা নির্দেশনা চাওয়া হয়।

ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এ রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে একই বছরের ২৮ জানুয়ারি আদালত রুলসহ আদেশ দেন।

আদেশে এসব ইটভাটা বন্ধ করতে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে বলা হয়। একইসঙ্গে ঢাকায় কী কারণে বায়ুদূষণ হচ্ছে এবং দূষণরোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন সে বিষয়ে একটি গাইডলাইন তৈরি করতে পরিবেশ সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন আদালত। কমিটিকে পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রাজধানীতে বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করে এইচআরপিবি।