একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৌলভীবাজারের বড়লেখার আব্দুল আজিজ ওরফে হাবুলসহ তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হলেন- আব্দুল মান্নান ও আব্দুল মতিন। এর মধ্যে আব্দুল মতিন পলাতক রয়েছেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার (১৯ মে) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। ২৪০ পৃষ্ঠার মোট রায়ে মূল অংশ পাঠ করেন বিচারপতিরা।
আদালতে আসামি আব্দুল মান্নানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম. সারোয়ার হোসেন ও আব্দুল আজিজের পক্ষে আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নি।
রায়ের পর প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নি বলেন, তিন আসামির সর্ব্বোচ্চ সাজা হয়েছে। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, এ রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল এ মামলার শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রেখেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর এ তিন জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত শুরু করে ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর শেষ করা হয়। তিন আসামির বিরুদ্ধে একাত্তরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের মতো পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বড়লেখার ৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ১ মার্চ মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানা পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর ২ মার্চ আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মান্নানকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
একাত্তরে দুই সহোদর আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মতিন ছাত্রলীগ করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তারা প্রশিক্ষণ নিতে ভারতের বারপুঞ্জিতে যান। কিন্তু প্রশিক্ষণরত অবস্থায় পালিয়ে এসে তারা রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। অপর আসামি আব্দুল মান্নান একাত্তরে স্থানীয় মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন। আব্দুল মতিন পলাতক রয়েছেন।