আদালতে চত্বরে বসেই জাল স্ট্যাম্পের রমরমা ব্যবসা!

আদালতে চত্বরে বসেই জাল স্ট্যাম্পের রমরমা ব্যবসা!

দেশের সর্বোচ্চ আদালত চত্বরে বসেই দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছিলেন জাল স্ট্যাম্পের রমরমা ব্যবসা। দীর্ঘদিন ধরে পরস্পর যোগসাজশে হাইকোর্টে জাল স্ট্যাম্প সরবরাহ করে কয়েক বছরে তারা ফাঁকি দিয়েছেন মোটা অংকের রাজস্ব।

তবে শেষ রক্ষা হয়নি জাল স্ট্যাম্প প্রস্তুত ও বিক্রির অভিযোগে অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন। আদালতে চত্বরে বসেই এমন জাল-জালিয়াতির কাজে লিপ্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন এলাকার বাসিন্দা মো. মনির হোসেন ওরফে ইমরান (৪০), দেলোয়ার ওরফে আইকে দেলোয়ার (৩৫) ও কুমিল্লার পাখির আলী (৩১)।

এসময় তাদের কাছ থেকে ৬৮৩টি ২০ টাকা মূল্যের বাংলাদেশ কোর্ট ফি, ৪৪৫টি ১০ টাকা মূল্যের বাংলাদেশ কোর্ট ফি, ১৮৫টি ৫ টাকার বাংলাদেশ কোর্ট ফি স্ট্যাম্পসহ মোট ১৯ হাজার ৩৫ টাকার স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়।

সিআইডি ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জিসানুল হক এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, একটি চক্র হাইকোর্ট ডিভিশনসহ বিভিন্ন স্থানে জাল স্ট্যাম্প বিক্রি করে আসছিল, এমন তথ্য পায় ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) সিআইডি। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (১৯ মে) ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) সিআইডির একটি দল হাইকোর্টের প্রশাসনিক ভবনের চতুর্থ তলায় অবস্থিত স্ট্যাম্প ভেন্ডারের দোকান এবং সড়ক ভবনের সামনে অবস্থিত দোকানে একযোগে সাঁড়াশি অভিযান চালায়।

জিসানুল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পরস্পর যোগসাজশে তারা হাইকোর্টে জাল স্ট্যাম্প সরবরাহ করে আসছিল। গত কয়েক বছর ধরে তারা এ ধরনের জাল স্ট্যাম্প ব্যবসায় জড়িত বলে সিআইডির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে। তাদের এই জাল-জালিয়াতির কারণে মোটা অংকের রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। এ ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় সিআইডি বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং ২০।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি ঢাকা মেট্রোর (দক্ষিণ) ইন্সপেক্টর মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, হাইকোর্ট চত্বরে প্রশাসনিক ভবনের পাশে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ক্যান্টিন রয়েছে। তার পাশে অবস্থিত ভবনেই স্ট্যাম্প ভেন্ডারের দোকান। এরই একটি দোকানে বসে তারা এ জাল স্ট্যাম্প বিক্রির মতো জালিয়াতির কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এ চক্রের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন জড়িত বলে আমরা জানতে পেরেছি।

তিনি বলেন, শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত সাত দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।