রাজধানীর জুরাইনে তিন পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় গ্রেফতার দুই আইনজীবীসহ পাঁচজনের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের বিচারিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুন) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহীর পক্ষে অপর আইনজীবী এবিএম শিবলী সাদেকীন এই আবেদন করেন।
আবেদনে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া ছাড়াও দুই আইনজীবীর রিমান্ড বাতিল চাওয়া হয়েছে এবং তিন পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই মামলা তদন্তে পুলিশ ব্যতীত অন্য কোন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে কেন করা হবে না সে বিষয়ে আর্জি জানানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস আবেদনের বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজ হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানি হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ জুন) জুরাইন রেলগেট এলাকায় রাস্তার উল্টোদিক থেকে আসা মোটরসাইকেল আরোহীকে আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্যকে মারধর করা হয়।
আহতরা হলেন- ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন, ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম ও শ্যামপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) উৎপল দত্ত অপু।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে স্ত্রীকে মোটরসাইকেলে নিয়ে বের হন সোহাকুল। তাঁর স্ত্রীর মাথায় হেলমেট না থাকায় জুরাইন সিগন্যালে তাঁদের আটকান ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। দুই পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে ইয়াছিন জাহান পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর গায়ে হাত তোলার অভিযোগ করেন। এরপর স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে একজন ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
এ ঘটনায় সোহাকুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী ইয়াছিন জাহানসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে শ্যামপুর থানায় মামলা করে পুলিশ। মঙ্গলবারই ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর বুধবার আসামিদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন রিমান্ডের আবেদন করেন শ্যামপুর থানার পরিদর্শক খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ।
অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) তোফাজ্জল হোসেন উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে পাঁচজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর ইয়াছিন জাহানের জামিন মঞ্জুর করেন।
আসামিদের রিমান্ডে পাঠানোর প্রতিবাদ জানিয়ে বেলা সাড়ে তিনটা থেকেই আদালত এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন শতাধিক আইনজীবী। বিকেল সাড়ে পাঁচটার সময়ও ঢাকার সিএমএম আদালতের সামনে অবস্থান নিয়ে গ্রেপ্তার আইনজীবীদের মুক্তির দাবিতে তাঁদের স্লোগান দিতে দেখা গেছে। তাঁরা বলেন, মামলায় আইনজীবীদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সঠিক নয়।