ধর্ম অবমাননা করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে নওগাঁয় এক কলেজ শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নওগাঁ সদর উপজেলার কাঁঠালতলী এলাকায় নিজ বাসভবন থেকে গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর শুক্রবার (১৭ জুন) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আবদুর রউফ মিঞা নওগাঁর রানীনগর মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
কলেজ কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন দিন আগে আবদুর রউফ তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে ধর্ম অবমাননা করে একটি পোস্ট করেন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান স্থানীয় লোকজন।
শুরুতে কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে স্থানীয় আলেম-ওলামাসহ একদল জনতা ওই শিক্ষকের বিচারের দাবিতে কলেজে অবস্থান নেয়। বিকেলে আবদুর রউফকে কলেজ কর্তৃপক্ষ কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে তাঁরা কলেজ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। এরপর আবদুর রউফকে তাঁর নিজ বাসভবন থেকে আটক করে পুলিশ।
সহকারী অধ্যাপক আবদুর রউফকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রানীনগর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, তিন কার্যদিবসের মধ্যে ওই শিক্ষককে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
তবে আবদুর রউফের দাবি, কোনো ধরনের নোটিশ তিনি পাননি। থানায় পুলিশি হেফাজতে থাকার সময় সাংবাদিকদের আবদুর রউফ বলেন, ‘আমি কবিতা লেখেছি। কোনো কটূক্তি করিনি। আর শোকজের কোনো কপি আমি পাইনি এবং জানিও না।’
এ বিষয়ে রানীনগর থানার ওসি (তদন্ত) সেলিম রেজা বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে আটক শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। রানীনগর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। পরে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরে আদালতের মাধ্যমে ওই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে রানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মহিলা কলেজের সভাপতি শাহাদাত হুসেইন জানিয়েছেন আবদুর রউফের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।