বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) -এর প্রিজন সেল কক্সবাজারের রিসোর্টে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
আজ বুধবার (২৯ জুন) সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনের আবেদনের শুনানিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দান মানিক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
শুনানিতে খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘ভিআইপি বন্দিরা কারাগারে গেলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ’র প্রিজন সেলে আসেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, যেন প্রিজন সেল কক্সবাজারের রিসোর্টে পরিণত হয়েছে। এই চর্চা বন্ধ করতেই হবে।’
শুনানি শেষে হাইকোর্ট হারুন-অর-রশীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বিএসএমএমইউ’কে বোর্ড গঠন করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রায় ১ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে কলাবাগান থানায় মামলা করেছিল দুদক। ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট অভিযোগ গঠন করে আদালত আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেন।
ওই মামলায় গত ১২ মে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের দায়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে ১২ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু একই মামলায় কোম্পানির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের’ কথা বিবেচনায় নিয়ে আদালত তার সাজা কমিয়ে দেন বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই রায়ে ৪৫ আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করেছেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন হারুণ-অর-রশিদ। গত ৯ জুন হারুন-অর-রশিদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। তবে তার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করলেও তাকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।
পরে গত ২৮ জুন কারাগারে থাকা সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদের চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন চেয়ে আবেদন করা হয়।