মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : শিশু গণধর্ষণের মামলায় ৩ আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ে একইসাথে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামীকে এক লক্ষ টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদয়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ আবদুর রহিম মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামীরা হলেন- টেকনাফের দক্ষিণ লেদা এলাকার আব্দুস সালামের পুত্র নুরুল আলম, জালাল আহমেদের পুত্র হেলাল উদ্দিন, মোহাম্মদ কাশেমের পুত্র মমতাজ মিয়া। মামলার অপর আসামী একই এলাকার নুর মোহাম্মদ মৃত্যুবরণ করায় তাকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা সবাই পলাতক রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট একরামুল হুদা। আসামীদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট নুরুল মোস্তফা মানিক ও অ্যাডভোকেট শাহ আলম বাবুল।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০০৩ সালের ৫ এপ্রিল বিকেলে কক্সবাজারের টেকনাফের দক্ষিণ লেদা এলাকায় নুর হাবা নামক সাড়ে ৯ বছরের এক কন্যা শিশু পাহাড় থেকে লাকড়ী কুড়িয়ে ঘরে ফেরার সময় শিশুটিকে আসামীরা জোর করে নির্জন স্থানে নিয়ে গণধর্ষণ করে।
পরে ধর্ষিতা শিশুর পিতা আবদুল জব্বার বাদী হয়ে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ৯ এর (৩) ধারায় টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ০৫/২০০৩ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৭৮/২০০৩ ইংরেজি (টেকনাফ) এবং নারী মামলা নম্বর : ১১৯১/২০১৮ ইংরেজি। মামলায় নুর মোহাম্মদ, নুরুল আলম, হেলাল উদ্দিন ও মমতাজ মিয়া’কে আসামী করা হয়।
তদন্ত ও রায়
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও), টেকনাফ থানার এসআই নুরুল ইসলাম ২০০৩ সালের ১ জুলাই আদালতে মামলাটির চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। আদালতে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীপক্ষে জেরা, আলামত প্রদর্শন, মেডিকেল সনদ পর্যালোচনা, যুক্তিতর্ক সহ সকল বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহিম মঙ্গলবার উল্লেখত আসামীত্রয়কে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ৯ এর (৩) ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে উপরোক্ত সাজা প্রদান করেন।
মামলার বাদী আবদুল জব্বার ২০০৪ সালের ২১ জুন মৃত্যুবরণ করেন।