নির্ধারিত সময়ের আগে রোহিঙ্গাদের পক্ষে জামিনের তদবির করা যাবে না
কক্সবাজার জেলা জজ আদালত

কক্সবাজার বিচার বিভাগ : চার মাসে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জামানত আদায়ের রেকর্ড

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : কক্সবাজার জেলা বিচার বিভাগে গত চার মাসে ৩ কোটি ৩২ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকার জামানতের অর্থ আদায় করা হয়েছে। যা দেশের অধস্তন আদালতে ন্যূনতম সময়ের মধ্যে জামানত আদায়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

উচ্চ আদালত ও কক্সবাজার বিচার বিভাগের ৪টি আদালতে জামিন পাওয়া আসামীদের জামিনের শর্তস্বরূপ তাদের কাছ থেকে জামানতের এ অর্থ আদায় করে রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জেলা নাজির বেদারুল আলম ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম’কে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, চলতি বছরের ৮ মার্চ থেকে গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত এ বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করা হয়েছে। জামিনপ্রাপ্ত আসামীরা জামিন নিয়ে যাতে পলাতক হয়ে না যায়, সেজন্য সম্প্রতি কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আসামীদের কাছ থেকে জামানতের অর্থ নেওয়ার এ যুগান্তকারী বিধানটি চালু করেন। যা দেশের অন্যান্য অধস্তন আদালতেও বিধানটি অনুসরণ করা হচ্ছে।

উল্লেখিত সময়ে কক্সবাজারের ৪টি আদালতে আসামীদের কাছ থেকে আদায়কৃত জামানতের অর্থের মধ্যে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে ২ কোটি ৯১ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আবদুল্লাহ আল মামুন এর আদালতে ২১ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা, কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মোহাম্মদ ফারুকী’র আদালতে ১৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা এবং কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ মাহমুদুল হাসান এর আদালতে ২০ হাজার টাকা জামানত আদায় করা হয় বলে জানান- জেলা নাজির বেদারুল আলম।

তিনি বলেন, বিধান অনুযায়ী জামিন প্রাপ্ত আসামী আদালতে জামিননামা দাখিল করার সাথে জামানতের অর্থ সরকারী কোষাগারে জমা করে জমা করার চালানের কপি জামিননামার সাথে আদালতে দাখিল করতে হয়। জামিনপ্রাপ্ত আসামীদের অধিকাংশই হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা মতে কক্সবাজারের বিভিন্ন আদালতে জামিননামা সম্পাদনের সময় জামিনপ্রাপ্তদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে জামানতের অর্থ আদায় করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির বেদারুল আলম আরো বলেন, মামলা গুলোর মধ্যে বেশীরভাগই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা। জামিনপ্রাপ্ত আসামী জামিন পাওয়ার পর পলাতক হলে জামানত বাবদ রাষ্ট্রের কোষাগারে জমাকৃত অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হবে। আবার মামলা নিষ্পত্তির পর আসামী খালাস পেলে জামানতের অর্থ সংশ্লিষ্ট আসামীকে ফেরত প্রদান করা হবে।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, আসামীকে জামিন প্রদানের অন্যান্য শর্তের সাথে জামানত নেওয়ার বিধানটি একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। তিনি বলেন, কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর বলিষ্ঠ এ উদ্যোগের ফলে বিচারাধীন মামলার জামিনপ্রাপ্ত আসামীরা পলাতক হওয়ার আশংকা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।

এতে একদিকে, রাষ্ট্রের কোষাগার সমৃদ্ধ হবে, অন্যদিকে, মামলা নিষ্পত্তিতে আদালতকে অহেতুক বিড়ম্বনা পোহাতে হবেনা এবং অপেক্ষাকৃত কম সময়ে মামলা নিষ্পত্তি করা যাবে বলেও জানান পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।