শোকের মাস আগস্ট শুরু আজ। জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে আজ পয়াল আগস্ট থেকে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মাসব্যাপী কালো ব্যাজ পরিধান করবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এবং এর আওতাধীন দপ্তর ও অধিদপ্তর সমূহের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তৈয়বুল হাসান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকীতে যথাযথ মর্যাদায় ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে সারাদেশে জাতীয় শোক দিবস পালিত হবে।
শোকের মাসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এবং এর আওতাধীন দপ্তর ও অধিদপ্তর সমূহের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পুরো আগস্ট মাসব্যাপী কালো ব্যাজ পরিধানের অনুরোধ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এদিকে করোনা মহামারি কেটে যাওয়ায় দু’বছর পর এবার এই মাস ঘিরে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। আজ থেকেই মাসজুড়ে জাতি স্মরণ করবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। মহান এই নেতার প্রতি হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। ঘৃণা, ধিক্কার জানানো হবে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকারী ও একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের।
অন্যান্য বারের মতো এবারও আগস্টের প্রথম প্রহর অর্থাৎ গতকাল রোববার রাত ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্বালন, আলোর মিছিল, শপথ গ্রহণ ও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়। এসব কর্মসূচি ঘিরে ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে ছিল শোকার্ত মানুষের ভিড়। এই আগস্টেই জাতির কলঙ্কিত এক অধ্যায়ের সূচনা ঘটেছিল।
জাতির কলঙ্কিত অধ্যায়
১৯৭৫ সালের আগস্টের মধ্যভাগে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ইতিহাসের এই মহানায়কের বুকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল শ্যামল বাংলার মাটি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে সপরিবারে জাতির পিতা হত্যার সঙ্গে একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের কূট ষড়যন্ত্র আর হামলার শিকার হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের মহান আদর্শ এবং চেতনাও। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে এর বিচারের পথ রুদ্ধ করে আরেক কলঙ্কিত ইতিহাস রচনা করা হয়েছিল।
১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেই অধ্যাদেশ বাতিল ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া ও নানা কূটকৌশলের জাল ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের চূড়ান্ত রায় শেষে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঁচ ঘাতক- সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও মুহিউদ্দিন আহমেদের ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা হয়।
২০২০ সালের ১১ এপ্রিল মধ্যরাতে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গ্রেপ্তার হওয়া বঙ্গবন্ধুর আরেক আত্মস্বীকৃত খুনি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয় একই কারাগারে। পুরো জাতি এখনও প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে বঙ্গবন্ধুর বাকি পাঁচ পলাতক খুনির ফাঁসি কার্যকরের।