কুষ্টিয়ায় আইনজীবী ও গবেষক সিরাজ প্রামাণিকের ৩৮তম আইনগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের একাংশ

কুষ্টিয়ায় আইনজীবী ও গবেষক সিরাজ প্রামাণিকের ৩৮তম আইনগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের তরুণ আইনজীবী, গবেষক ও আইনগ্রন্থ প্রণেতা পি.এম. সিরাজুল ইসলাম (সিরাজ প্রামাণিক) এর ৩৮তম আইনগ্রন্থ ‘জমি-জমা নিয়ে আপনার যত আইনী সমস্যা ও তার আইনী সমাধান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়েছে।

গতকাল (৩১ জুলাই, রবিবার) বিকেলে কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী ল’কলেজ এর হলরুমে এক অনাড়ম্বর পরিবেশে কুষ্টিয়া ল’কলেজ এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ্যাডভোকেট আহম্মেদ আলীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন কুষ্টিয়া আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জি.পি এ্যাডভোকেট আ. স. ম. আক্তারুজ্জামান মাসুম।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জজ কোর্টের সাবেক স্পেশাল পি.পি, সিনিয়র আইনজীবী এ্যাডভোকেট শরীফ উদ্দিন রিমন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ আবু সাঈদ, সিনিয়র আইনজীবী ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট হাসানুল আসকার হাসু, কুষ্টিয়া ল’ কলেজের শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম বেলাল, এ্যাডভোকেট রিফাত জাহান মুন্না প্রমুখ।

কুষ্টিয়া ল’ কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আশরাফী’র সঞ্চালনায়, আরেক শিক্ষার্থী আরমিন নাহার’র পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও লেখকের স্বাগত বক্তব্যর মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এ্যাডভোকেট শাতিল মাহমুদ, লেখক ইয়াসির আরাফাত, রেজাউল করিম রেজা, ওয়ালিদ জোয়াদ্দার, আশিফ ইকবাল প্রমুখ।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন এ্যাডভোকেট আহসান হাবিব লিংকন, এ্যাডভোকেট সজল বসু, এ্যাডভোকেট শাতিল আহম্মেদ, এ্যাডভোকেট নিয়ামত আলী খান, এ্যাডভোকেট নবীন সহ ল’ কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীবৃন্দ। উপস্থিত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন ল’ কলেজের শিক্ষার্থী স্বর্ণা, সুমি, নাসিমা, পাপিয়া, আফরোজা, বিউটি, রাশিদা রিতা প্রমুখ।

বইটিতে যা যা রয়েছে

জমি-জমা নিয়ে বইটিতে রয়েছে আইনের সহজ পাঠ, বাস্তব কেইস ষ্টাডি, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত, সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের পাঠ উপযোগী। ফলে এ বই সাধারণ পাঠক থেকে শুরু করে আইনের শিক্ষার্থী, আইনজীবী, বিচারক ও গবেষকদেরও প্রয়োজন মেটাবে। প্রতিটি অধ্যায় আইনের গৎবাঁধা মারপ্যাঁচের শব্দ পরিহার করে সহজবোধ্য করে রচিত হয়েছে। প্রতিটি বিষয়ে দেখানো হয়েছে উদাহরণ। এতে আইনের বিষয়গুলো আর তাত্ত্বিক থাকেনি, হয়ে উঠেছে ব্যবহারিক। ফলে পাঠক সহজেই তাঁর সমস্যার সহজ সমাধান খুঁজে পাবেন।

প্রতিটি বিষয়ে সর্বশেষ সংশোধনী থেকে তথ্য দেওয়া হয়েছে। সুবিন্যস্তভাবে সাজানোর কারণে বিষয়গুলো হয়ে উঠেছে সাবলীল। আইনের ভাষা কঠিন, পড়ে বোঝা কষ্টকর এ ধারণা পাল্টে যাবে বইটি পড়লে। জমি-জমার আইনগুলো নিয়ে কোনো আইনি ঝামেলায় পড়লে কী করতে হবে, নিয়মকানুন কী, কোথায় যেতে হবে, কত খরচ হবে পাঠক খুব সহজেই এ বই থেকে পাবেন। জমি-জমা নিয়ে নানাবিধ কলহ বিবাদকে চিহিৃত করে সেগুলোর বিচার, মীমাংসা, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এর অনুকূলে যে নীতি ও আইন রয়েছে তার প্রয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ বইটির ভূমিকা অপরিসীম।

উৎপাদনের মৌলিক উপাদান হচ্ছে ভূমি। ভূমিকে অবহেলা করে স্থায়িত্বশীল অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য প্রতিষ্ঠা কখনোই সম্ভব নয়। সব মানুষই কোন না কোন ভাবে ভূমির সাথে সম্পর্কিত। অথচ ভূমি আইন সম্পর্কে আমাদের দেশের সাধারণ জনগণের ধারণা খুবই কম। ফলে বাংলাদেশের আদালতে বিচারাধীন শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ মামলাই জমি-জমা সংক্রান্ত। মানুষ যাতে অল্প টাকায় অতি সহজে ভূমি বিষয়ক কিছু মৌলিক আইন সম্পর্কে সচেতন হতে পারে এবং নিজেদের অধিকার সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে তার জন্য এ বইটির ভূমিকা অপরিসীম।

দেওয়ানী মামলার সকল কার্যক্রম একটা নিয়ম পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হয়। আদালতে বিবদমান পক্ষগণের যাবতীয় আরজি, জবাব, আবেদন-নিবেদন একটি নির্ধারিত নমুনায় দাখিল করতে হয়। বইটিতে বিভিন্ন মামলার আরজি, জবাব, আপিল ও দরখাস্তের নমুনা সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছেন আইন বিষয়ক গ্রন্থের প্রকাশক ‘ইউনিক ল বুক হাউজ’। দেশের অভিজাত লাইব্রেরীগুলোতে বইটি পাওয়া যাচ্ছে। ৫৫ গ্রাম অফসেট কাগজে ছাপা বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪০৮। মূল্য ৩৫০ টাকা মাত্র। চমৎকার প্রচ্ছদ।