বগুড়ার নন্দীগ্রামে বিরোধপূর্ণ একটি জমি নিয়ে মামলা হয় ১৯৪৪ সালে। তবে দীর্ঘ ৭৮ বছরেও শেষ হয়নি বিচার কাজ। মামলার বাদী-বিবাদী ছাড়াও মারা গেছেন তাদের ছেলে-মেয়ে। এখন তাদের পক্ষে মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন নাতিরা। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, দুপক্ষ সমঝোতায় না এলে এ মামলা শেষ হতে সময় লাগতে পারে আরো ৫০ বছর।
জানা যায়, নন্দীগ্রামের নিমাই দিঘী মৌজার প্রায় ৫০ একর জমি নিজেদের দাবী করে নওফেল ও রবিয়ারসহ ৩৬ জনকে বিবাদী করে সাব জজ আদালতে মামলা করেন একই গ্রামের রহিম উদ্দিন ও জইম উদ্দিন। এর মধ্যে ১৯৫৭ সালের পর থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত স্থগিত ছিল মামলার কার্যক্রম।
এরপর আবারো মামলাটি নিয়ে আদালতে যান দুপক্ষ। দীর্ঘ ৭৮ বছর আগে দায়ের করা এই মামলাটির মূল বাদী-বিবাদীর কেউ বেঁচে নেই। নানা রহিম উদ্দিনের পক্ষে মামলা চালাচ্ছেন তার তিন নাতি। তাদের বয়সও এখন পঞ্চাশোর্ধ্ব।
যুগ যুগ ধরে চলা এ মামলা এখনো নিষ্পত্তি না হওয়ায় হতাশ দুপক্ষের লোকজন। দীর্ঘ সময় ধরে মামলা বিচারাধীন থাকায় পড়ে থাকা এই জমি নিয়ে তাদের অনেকেই হারিয়েছেন আগ্রহ।
বর্তমানে মামলাটি বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে মামলাটি। তবে এ মামলার বিচার কবে শেষ হবে সেই ধারণা নেই আইনজীবীদের।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান বলেন, এটি ১৯৪৪ সালের মামলা। প্রায় ৫০ একর জমি নিয়ে বিরোধ। ৭৮-৭৯ বছর পার হলেও এই মামলার জট খুলছে না, নিষ্পত্তিও হচ্ছে না। দুইপক্ষই চায় দ্রুততার সাথে এই মামলার নিষ্পত্তি হোক।
মামলার নথিপত্র বিশ্লেষণ করে আইনজীবীরা বলছেন, দুপক্ষ সমঝোতায় না এলে এ মামলা শেষ হতে সময় লাগতে পারে আরো ৫০ বছর।
এদিকে বগুড়া আদালতে শুধু সিভিল বা দেওয়ানি মামলা নয়, জট লেগেছে ফৌজদারি বা ক্রিমিনাল মামলারও। মামলা দায়ের করতে সময় না লাগলেও নিষ্পত্তিতে লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ সময়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, খাদ্য বিভাগের ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি মামলার রায় ৩০ বছরেও পায়নি খাদ্য অধিদপ্তর। একইভাবে কাহালুতে লাখ রাউন্ড গুলি ও বিস্ফোরক উদ্ধার মামলার কোন সুরাহা হয়নি এখনো। গত ১৬ বছরেও এই মামলার সাক্ষী হাজির করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ।
সূত্র : ইনডিপেন্ডেন্ট টিভি