জাতীয় সংসদ এলাকায় স্পিকার-ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন মূল নকশার বাইরে বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে এ দুটি বাসভবন বৈধ বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
এ বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে আজ মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ রায় দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম। আর রাষ্টপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
রায়ের পর শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ জানান, হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে ওই দুটি বাসভবন বৈধ।
এর আগে পরিবেশবাদী সংগঠনের রিটের শুনানি নিয়ে ২০০৪ সালের ২১ জুন স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন লুই আইকানের মূল নকশার বাইরে বলে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে সংসদ ভবন এলাকাকে বিশ্ব ঐতিহ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে ইউনোস্কোর কাছে আবেদনেরও নির্দেশ দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
প্রসঙ্গত, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মাঝামাঝি সময়ে সংসদ ভবনের মূল ভবনের পাশেই খোলা সবুজ চত্বরে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিষয়টি শেষপর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এর মধ্যে নির্মাণ করা হয় স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন।
ইন্সটিটিউট অব আর্কিটেক্ট (আইএবি) এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) যৌথভাবে সংসদ সচিবালয় ও গণপূর্তের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করে।
রিট আবেদনে বলা হয়, লুই আই কানের মূলনকশা লঙ্ঘন করে সংসদ ভবন এলাকায় এসব আবাসিক ভবননির্মাণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে ২০০৪ সালের ২১ জুন হাইকোর্ট ওই রিট আবেদনের ওপর রায়ে বলেন, সংসদ ভবন এলাকায় স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন নির্মাণ কার্যক্রম অবৈধ। সেইসঙ্গে রায়ে সংসদ ভবন এলাকাকে জাতীয় ঐতিহ্য ঘোষণার নির্দেশ দেন।
তবে হাইকোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিলে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করা হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করলে তা মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ।
অবশ্য হাইকোর্টের রায় স্থগিত থাকা অবস্থায় স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন নির্মাণ শেষ হয়ে গেছে। অবশেষে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি শেষে দেশের সর্বোচ্চ আদালত আজ হাইকোর্টের রায়টি (স্যাটাসাইড) বাতিল করে রায় দেন।