ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামের রাজধানীতে আটতলা বাড়ি-প্লটসহ বিপুল সম্পদ অর্জন ও বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে তদন্ত করে আগামী তিন মাসের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
এ বিষয়ে এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার (২১ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন সকালে প্রতিবেদন দিয়ে দুদক আদালতকে জানায়, রমনার ওসির বিপুল সম্পদ থাকার বিষয় তারা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মনিক। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান।
গত ১০ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানসহ রিটে সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
ওসি মনিরুল ইসলামের বিপুল সম্পদ নিয়ে এর আগে ৫ আগস্ট একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ৮ আগস্ট বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে এনে এ বিষয়ে পদক্ষেপ ও তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন ব্যারিস্টার সুমন।
ওসির সম্পদের উৎস কী তা জানতে চেয়ে দুদককে তদন্ত করার দায়িত্ব দিতে আবেদন করেন তিনি। তখন আদালত বিষয়টি আবেদন আকারে নিয়ে আসতে বলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ এ বিষয়ে রিট আবেদন করেছেন তিনি।
গত ৫ আগস্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঢাকায় আটতলা বাড়ি করেছেন। বানাচ্ছেন আরেকটি ডুপ্লেক্স বাড়ি। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে তার রয়েছে চারটি প্লট। বাড়ি, প্লটসহ এ বিপুল সম্পদের মালিক ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম। রাজধানীর মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটিতে এক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।’
‘সরকারি একটি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ওসি মনিরুলের এসব অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে পুলিশ সূত্র বলছে, যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তার সম্পদের পরিমাণ এর চেয়ে অনেক বেশি।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘পুলিশের একজন পরিদর্শক হয়ে ওসি মনিরুল কীভাবে এত সম্পদের মালিক হয়েছেন, তা নিয়ে পুলিশ বিভাগে আলোচনা চলছে। বর্তমানে তিনি নবম গ্রেডে ২২ হাজার টাকা স্কেলে সাকুল্যে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বেতন পান। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি এই সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধারণা করছেন।’