অবিবাহিত বা সমকামী যুগলের সম্পর্কও পরিবারের আওতার মধ্যে পড়ে। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতে এই সম্পর্কগুলো ‘বিরল’ মনে হলেও, আইনের চোখে তা নিরাপত্তা পাওয়ার যোগ্য বলে অভিমত দিয়েছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।
দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও এএস বোপান্নার বেঞ্চ গতকাল রোববার (২৮ আগস্ট) এক মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
আদালত বলেছে, পরিবার বলতে সমাজ ও আইনের চোখে যা বোঝায়, তা হলো বাবা-মা ও তাঁদের সন্তান। একই সঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, অনেক ক্ষেত্রেই নানা পরিস্থিতিতে একটা পরিবারের কাঠামোয় বদল ঘটে। যা অনেক পরিবারের কাছে প্রত্যাশিত নয়। এই ধরনের পরিবার দুই অবিবাহিত, সমকামী যুগলকে নিয়েও তৈরি হতে পারে। এ ধরনের সম্পর্কগুলো হয়তো সমাজে তথাকথিত পারিবারিক সম্পর্কের মতো নয়, কিন্তু আইনত তাঁদের সব রকম সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য।
ভারতে সমকামিতা অপরাধ নয়। ২০১৮ সালে এই রায় দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের রায়ের পর ভারতে সমকামী যুগলদের ‘লিভ-ইন’ করার অধিকার অনেকটাই মান্যতা পেয়েছে। গত কয়েক বছরে সমকামী যুগলদের বিয়ের ঘটনাও দেখা গেছে।
যদিও দেশটিতে এখনও সমকামী বিবাহ আইনি বৈধতা পায়নি। সেই দাবি উঠেছে সমকামীদের মধ্য থেকে। এমনকি, সন্তান দত্তক নেওয়ার আবেদন জানিয়ে সরব সমকামী ও লিভ-ইন যুগলরাও। এরকম প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ জানালেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালত আরও বলেছে যে, বিবাহবিচ্ছেদ হোক বা সঙ্গীর মৃত্যু, কিংবা আলাদা থেকে যদি কেউ একা সন্তান পালন করেন, শিশুর অভিভাবকত্বও যদি কেউ একা পালন করেন, সে ক্ষেত্রে তিনি পুনর্বিবাহ করুন বা দত্তক নিয়ে কিংবা শুধু মাত্র সন্তান পালক হন, তা সমাজের দৃষ্টিতে পরিবার হিসাবে গণ্য না হলেও আইনে তাঁরা সবরকম সুবিধা পাওয়ার যোগ্য।
স্বামীর আগের পক্ষের দুই সন্তানের লালনপালনের জন্য অফিস থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন এক নারী। বর্তমানে তাঁর নিজের সন্তানের জন্যও এই ছুটি চান। কিন্তু তা দিতে নারাজ তাঁর অফিস। এ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই নারী। সেই মামলার শুনানিতেই এই পর্যবেক্ষণগুলো তুলে ধরেন সুপ্রিম কোর্ট।