সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের কার কত অর্থ আছে, নাম-পরিচয় ছাড়াই সে বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ায় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধানকে তলব করেছে হাই কোর্ট। বিএফআইইউ’র প্রধান মাসুদ বিশ্বাসকে বুধবার বেলা ১১টায় আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএফআইইউ’র প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হলে আজ মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ এমন মন্তব্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘সাদা কাগজে লিখে দিয়ে দিলেন। নাম-ঠিকানা-পদবি নেই। গোঁজামিল হয়ে গেল না? বিষয়টি কি এমন যে ধরি মাছ না ছুঁই পানি। যা হওয়ার হোক, যেন তাঁর নাম (আদালতে দাখিল করতে যে কর্মকর্তা কাগজ দিয়েছেন) না আসে। এত ভয় কিসের? যে কথা লিখেছেন, তার নিচে সই দিলেও হতো। নাম লিখলেন না, সই দিলেন না, যা খুবই উদাসীনতা। এটি কি কেউ গ্রহণ করবে? এই তথ্যাদির ওপর নির্ভর করা যায় না। এমন কাগজ দাখিল করা দুঃখজনক।’
গত ১০ অগাস্ট রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়া বলেন, সুইস ব্যাংকে অর্থ জমা করা বাংলাদেশিদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য সরকার তাদের কাছে চায়নি।
তিনি বলেন, “এসব বিষয়ে (তথ্য পাওয়ার বিষয়ে) কীভাবে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যায়, সে বিষয়ে সরকারকে সব ধরনের তথ্য আমরা দিয়েছি। কিন্তু আলাদাভাবে অর্থ জমা করার বিষয়ে কোনো অনুরোধ আসেনি।”
ওই খবর নজরে এলে ১১ অগাস্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকার ও দুদকের ব্যাখ্যা চেয়েছিল আদালত।
সে ব্যাখ্যায় গত ১৪ অগাস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিএফআইইউ’র একটি প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরেন। একই সাথে দুদকের আইনজীবীও আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের বক্তব্য শুনে ওই দিন আদালত বলে, রাষ্ট্রদূত যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বক্তব্যের সাথে ‘সাংঘর্ষিক’।
এরপর আদালত ওই প্রতিবেদন এবং বক্তব্য ‘হলফনামা’ আকারে দাখিলের নির্দেশ দিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু ওই প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে ‘যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায়’ মঙ্গলবার শুনানির সময় বিএফআইউউ প্রধানকে তলব করা হল।