জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিনের মেয়াদ বেড়েছে। আগামী ২০ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ধার্য দিনে আজ সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন জামিনে থাকা আসামি সম্রাট আদালতে উপস্থিত হন। এসময় এ মামলার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী দেশের বাইরে থাকায় অভিযোগ গঠনের জন্য সময়ের আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আগামী ২০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
এছাড়া সম্রাটের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়া আইনজীবী তাঁর স্থায়ী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী স্থায়ী জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন বহাল রাখেন।
এর আগে গত ২২ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএসএমইউ) থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
এরপর সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী অভিযোগ গঠন শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এর বিরোধিতা করেন।
আদালত আসামিপক্ষের সময়ের আবেদন শেষবারের মতো মঞ্জুর করে ১৯ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এছাড়া সম্রাটের আইনজীবী জামিন আবেদন করলে আদালত তা ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মঞ্জুর করেন।
জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় গত ১১ মে সম্রাটকে জামিন দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত।
এ মামলায় জামিন পাওয়ার আগে রমনা থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গত ১১ এপ্রিল জামিন পান সম্রাট। এর একদিন আগে ১০ এপ্রিল অর্থপাচার ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের পৃথক দুটি মামলায় ঢাকার পৃথক আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
চার মামলার সবগুলোতে জামিন পাওয়ায় গত ১১ মে বিএসএসএমইউ প্রিজন সেল থেকে কারামুক্ত হন সম্রাট।
জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলার বিচারিক আদালতের দেওয়া জামিন বাতিল চেয়ে গত ১৬ মে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। গত ১৮ মে দুদক এ মামলায় সম্রাটের জামিন বাতিল করেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
একইসঙ্গে সাতদিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। ২৪ মে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন সম্রাট। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী তার জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ২২ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। অসুস্থ বিবেচনায় ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
সম্রাটের বিরুদ্ধে করা চার মামলায় এর আগেই তিন মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন। ফলে তার মুক্তিতে কোনো বাধা ছিল না।
সারাদেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ওই বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।