কক্সবাজারে একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার তদন্তে গাফিলতি, অবহেলা এবং ত্রুটিপূর্ণ অভিযোগপত্র দাখিলের অভিযোগে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকী গত বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্তেম্বর) এই আদেশ দেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম বিভাস কুমার সাহা। তিনি কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই)।
চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আশেক ইলাহী শাহাজাহান নূরী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আদেশের কপি পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩০ মে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় তৎকালীন এসআই সনৎ বড়ুয়া বাদী হয়ে তিনজনকে আটক ও পাঁচ থেকে ছয়জন অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে একটি ডাকাতির প্রস্তুতি মামলা করেন।
ওই মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন শহরের বিজিবি ক্যাম্পসংলগ্ন এসএমপাড়ার মো. নাছিরের ছেলে আবদুল গফুর (২২), একই এলাকার বড়পুকুরসংলগ্ন আবদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ তারেক (২২) ও লাইটহাউজপাড়ার মসজিদের পাশের মৃত আবুল বশরের ছেলে মোহাম্মদ জাহেদ (২৩)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একই থানার এসআই বিভাস কুমার সাহা ২০২১ সালের ৪ মার্চ আদালতে এজাহার নামীয় তিন আসামিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্র বিশ্লেষণ করে আদালত এজাহারনামীয় তিনজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করলেও বাকি তিন আসামিকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ মতে, এজাহারে নাম না থাকা সত্ত্বেও যে তিনজনকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরা ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে কোনো বক্তব্য তদন্ত কর্মকর্তাকে দেননি। এমনকি ওই তিনজনের নামও সাক্ষীরা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেননি।
তা ছাড়া অভিযোগপত্রে নানা ত্রুটি ধরা পড়ে। তদন্ত কর্মকর্তা কেন এবং কীভাবে সন্ধিগ্ধ তিনজন আসামিকে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করেছেন—তার বিবরণ দেননি। এ ধরনের অবহেলা, ত্রুটি ও বিচ্যুতি বিচার কাযক্রম বিলম্বিত করার পাশাপাশি সংকট তৈরি করে বলেও আদালত পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন।
এদিকে জানতে চাইলে বিভাস কুমার সাহা বলেন, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর কক্সবাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ পুলিশকে একযোগে বদলি করা হয়। ওই সময় তিনি কক্সবাজারে যোগদান করেন এবং যোগদানের পর এই ডাকাতি প্রস্তুতি মামলাসহ ৩৫টি মামলার তদন্তের ভার পান। নবাগত হিসেবে শহরের রাস্তাঘাট, মানুষজন চেনাজানা ছিল না। এ কারণে অনিচ্ছাকৃতভাবে অভিযোগপত্রে ভুলত্রুটি থাকতে পারে। এর পেছনে অনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।