একইভাবে, এই সময়ে সাড়ে ১১ হাজারের অধিক নতুন ই-নামজারি আবেদন জমা হয়েছে। আবেদন ফি বাবদ প্রায় ৮ লক্ষ টাকা একইভাবে সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। বিভিন্ন ই-নামজারি ফি বাবদ এই সময় ৭৭ লক্ষ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ এর পর ম্যানুয়াল/নগদ তথা ক্যাশে কোনো ধরণের নামজারি ফি গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত শনিবার সরকারি ছুটির দিন ১ অক্টোবর ২০২২ থেকে এই সিদ্ধান্ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হয়, তবে গতকাল রবিবার (২ অক্টোবর) ছিল ক্যাশলেস ই-নামজারি বাস্তবায়নের প্রথম কার্যদিবস।
ই-নামজারি ব্যবস্থা ক্যাশলেস হবার কারণে নামজারি সংশ্লিষ্ট কাজে ভূমিসেবা গ্রাহকের সময়, খরচ এবং ভ্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। ফলে আশা করা যাচ্ছে এই সংক্রান্ত ভোগান্তিও আরও অনেকাংশে কমে আসবে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে নামজারি সেবা গ্রহণের বেশ কয়েকটি ধাপ এখন সরকারি কার্যদিবস এবং কর্মঘণ্টার উপর নির্ভরশীল নয়। নাগরিক যেকোনো সময়, এমনকি সরকারি ছুটির দিন নিজ সুবিধাজনক সময় আবেদন করতে পারছেন এবং ফি জমা দিতে পারছেন।
‘হিউম্যান-টু-হিউম্যান কন্টাক্ট’ কমে যাবার কারণে আসাধু ব্যক্তিদের অপতৎপরতার সুযোগ কমে এসেছে। এছাড়া, অনলাইনে শুনানির আবেদন গৃহীত হয়ে যাদের শুনানিও অনলাইনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাদের নামজারি মামলার শুনানির সময়ও ভূমি অফিসে যেতে হয় না।
উল্লেখ্য, নামজারি আরও সহজ করতে দলিল মূলে নামজারি ব্যবস্থা স্থাপনেরও উদ্যোগ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ব্যক্তি আবেদনে বা এলটি নোটিশ প্রাপ্তির পর সাধারণ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৮ কার্যদিবস, প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য মহানগরীর জন্য ০৯ কার্যদিবস ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ১২ কার্যদিবস এবং নির্দিষ্ট কয়েকটি জেলার বিনিয়োগবান্ধব শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ০৭ কার্যদিবসের মধ্যে নামজারি সেবা পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও সাধারণ ক্ষেত্রে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ জমির নামজারি সেবা পাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, বছরে নামজারি আবেদনের সংখ্যা ক্ষেত্রভেদে গড়ে ২২ থেকে ২৫ লক্ষের মধ্যে হয়ে থাকে। কোর্ট ফি ২০ টাকা এবং নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা একত্রে ই-নামজারি আবেদনের শুরুতে প্রদান করতে হয় বলে এই দুটি ফি একত্রে ই-নামজারি আবেদন ফি নামে পরিচিত।
এছাড়া নামজারি আবেদন মঞ্জুর হলে রেকর্ড সংশোধন ফি ১ হাজার টাকা এবং ও খতিয়ান সরবরাহ ফি ১ শত টাকা দিয়ে ডিসিআর সংগ্রহ করতে হয় বলে এই পরবর্তী দুটি ফি ডিসিআর ফি নামেও পরিচিত।
এই চার ধরণের ফি প্রদানে নামজারির জন্য মোট প্রকৃত খরচ ১ হাজার ১ শত ৭০ টাকা। এসকল ফি এখন থেকে অনলাইনে মোবাইল ওয়ালেট কিংবা ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমেই পরিশোধ করতে হবে; কোনোভাবেই ম্যানুয়ালি তথা নগদ অর্থে পরিশোধ করা যাবেনা।