সারা দেশের ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নিবন্ধন ছাড়া যারা ডাক্তারি প্রাকটিস করবেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি তিন বছরের বেশি কেন করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভুয়া চিকিৎসকের অনুসন্ধান শেষে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংস্থাটিকে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট জে আর খান রবিন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
গতকাল সোমবার (৫ ডিসেম্বর) দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০’ এর ধারা ২৮ (৩) ও ২৯ (২) সংশোধন করে ভুয়া ডাক্তারের যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডের সাজাসহ জরিমানার বিধান চেয়ে দায়ের করা রিটের শুনানি হয়।
এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার ঠিক করেছিলেন হাইকোর্ট। তারই ধারাবাহিকতায় আজ এই আদেশ দেওয়া হলো।
এর আগে নভেম্বর মাসে রিটটি করা হয়েছিল। রিটকারী আইনজীবী জে আর খান রবিন আবেদনে ভুয়া চিকিৎসকের সাজা তিন বছর ও জরিমানা এক লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ডসহ জরিমানা বাড়াতে বিবাদীদের ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানিয়েছিলেন। একই সঙ্গে সাজা বাড়ানোর জন্য কেন সুপারিশ করা হবে না, সে মর্মেও রুল চাওয়া হয়েছিলে।
রিটে বিবাদী করা হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি ও রেজিস্ট্রার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে।
রিটকারী আইনজীবী বলেন, মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ডাক্তারদের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু বর্তমানে অনেকে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান আইনে যে সাজার বিধান রয়েছে, একজন ভুয়া ডাক্তারের চিকিৎসার কারণে মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় তা অত্যন্ত নগণ্য। এ কারণে দেশে ভুয়া ডাক্তারদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সেবাও হুমকির মুখে পড়ছে।