রাজধানীর ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা থেকে গত ১০ বছরে সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অপসারণের নির্দেশনা অমান্য করায় ৪ সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানি শেষে সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এই ৪ কর্মকর্তা হলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা এবং এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম ও অনুমোদিত কর্মকর্তা নুরুজ্জামান হোসেন।
আদেশ বাস্তবায়ন না করায় আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকার বৈশিষ্ট্য রক্ষার নির্দেশনা চেয়ে ২০১১ সালে হাইকোর্টে রিট করেন সেখানকার বাসিন্দা এম এ মাসুদ ও এম এ মতিন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি আদালত রুল জারি করেন।
সেই সঙ্গে ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকায় নতুন স্কুল, কলেজ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন ও অনুমোদনে অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা দেন। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১২ সালের ১১ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় যাবতীয় বাণিজ্যিক কার্যক্রম অবৈধ ঘোষণা করে এবং এলাকার আবাসিক বৈশিষ্ট্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে অপসারণের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
তবে আদালত জানায়, এই সিদ্ধান্তে মিরপুর রোড, সাতমসজিদ রোড, ধানমন্ডি-২ এবং ধানমন্ডি-২৭ এলাকায় অনুমোদিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত নয়।
এসব নির্দেশনা যথাযথ পালন না করায় মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে গণপূর্ত সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, সাবেক প্রকৌশলী ও অথরাইজড অফিসারসহ সংশ্নিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন।