মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : ৬০ হাজার ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় কক্সবাজারে একজনকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদন্ড এবং একইসাথে ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদয়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডিত আসামী হলেন কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল গ্রামের মোহাম্মদ আবুল হোছন ও আয়েশা আকতারের পুত্র মোঃ আলী আহমদ। দন্ডিত আসামী রায় ঘোষণার সময় আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ ও এপিপি অ্যাডভোকেট দীলিপ কুমার ধর। আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট নুরুল মোস্তফা মানিক ও অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম।
সংশ্লিষ্ট আদালতের নাজির বেদারুল আলম ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০২১ সালের ১২ মার্চ সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে টেকনাফের সীমান্ত এলাকা নাফ নদী সাতরিয়ে এপারে উঠার সময় বিজিবি’র টেকনাফ-২ এর উনচিপ্রাং বিওপি’র একটি টিম এক অভিযান চালিয়ে মোঃ আলী আহমদ-কে আটক করে। বিজিবি সদস্যরা আটককৃত আলী আহমদ এর দেহ তল্লাশি করে তার কোমরে গামছা দিয়ে বেঁধে রাখা ৬০ হাজার পিস ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করে।
এঘটনায় বিজিবি’র নায়েব সুবেদার মোঃ নওশের আলী খান বাদী হয়ে মোঃ আলী আহমদকে আসামী করে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর ১০(গ) ধারায় টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৪৪/২০২০২১ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ১৯৩/২০২১ ইংরেজি (টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নম্বর : ১৩৯৮/২০২১ ইংরেজি।
বিচার ও রায়
২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে মামলাটির বিচারের জন্য চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলাটির ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, সাক্ষীদের আসামী পক্ষে জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন পর্যালোচনা, আসামীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মঙ্গলবার মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য রাখা হয়।
রায়ে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মামলার একমাত্র আসামী নুরুল আলমকে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর ১০(গ) ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড (৩০ বছর) এবং একইসাথে এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন।
বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, মামলায় আসামী মোঃ আলী আহমদ এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। সে অনুযায়ী আসামীর সর্বোচ্চ সাজা হওয়া উচিত। কিন্তু আসামীর কম বয়স বিবেচনা, তার বিরুদ্ধে অন্য কোন মামলা না থাকায় কিছুটা নমনীয়তা প্রদশর্ন করে আসামীকে মৃত্যুদন্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।