ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুরের মামলায় ১৩ জন আসামিকে ৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিদের দুই হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ পারভেজের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আকি, মোখলেছ মিয়া, মো. মফিজুল হক, খসরু মিয়া, নাজির রহমান, মো. মাফুজ মিয়া, ইদন মিয়া, শেখ মো. আব্দুল আহাদ, সায়হাম রাব্বি শ্যাম, মীর কাসেম, আনিস মিয়া, তাবারক রেজা, সজীব চৌধুরী।
দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন, দেওয়ান আতিকুর রহমান আকি, মো. মফিজুল হক, সায়হাম রাব্বি শ্যাম, আনিস মিয়া ও তবারক রেজা। তাদের সবার বাড়ি নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
তবে মামলার রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী কামরুজ্জামান মামুন বলেন, যেকোনো মামলার সাজা দিতে গেলে নূন্যতম সাক্ষ্য-প্রমাণ প্রয়োজন। কিন্তু সাক্ষ্য-প্রমাণহীন এই মামলায় ১৩ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনঙ্গণে এই ফরমায়েশি রায় এটিই প্রথম। আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে আমরা ন্যায় বিচার পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আইনজীবী কামরুজ্জামান মামুন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর নাজমুল হোসেন বলেন, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সাক্ষ্য-প্রমাণ বিচার বিশ্লেষণ করেই রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এটি অনুকরণীয় রায় হয়ে থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৮ অক্টোবর হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জেলে রসরাজ দাসের ফেসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্ম অবমাননা করে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ২৯ অক্টোবর স্থানীয়রা তাকে পুলিশে সোপর্দ করে।
এছাড়াও ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে ৩০ অক্টোবর উত্তেজিতরা বিভিন্ন হিন্দু মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা চালায়। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় আটটি মামলা দায়ের করা হয়। এতে দুই হাজারেরও বেশি লোককে আসামি করা হয়