নাটোরে চাঁদার দাবিতে থানায় আটকে রেখে মারধরের অভিযোগে বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), দুই উপপরিদর্শকসহ (এসআই) পাঁচ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিজাম উদ্দিন (৩৩) নামের এক কাঠ ব্যবসায়ী।
বাগাতিপাড়া আমলি আদালতে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে তিনি মামলাটির আবেদন করেন। বাগাতিপাড়া আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবু সাঈদ এর আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ সুপার, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টেগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
বাগাতিপাড়া আমলি আদালত সূত্র জানায়, উপজেলার যোগীপাড়া গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম, দুই উপপরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম ও শাকিল আহমেদ, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল করিমের স্ত্রী অঞ্জনা বেগম ও তাঁর বাসার তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাসারকে আসামী করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি অঞ্জনা বেগম বাৎসরিক ভাড়ায় বাদী নিজাম উদ্দিনের কাছে দুটি পাওয়ার ট্রিলার ইজারা দেন। কিন্তু পাওয়ার ট্রিলারের বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কাঠ পরিবহনের সময় তিনি বারবার হয়রানির শিকার হচ্ছিলেন। এক বছর পর তিনি পাওয়ার ট্রিলারটি তাঁকে (অঞ্জনা) ফেরত দেন এবং ১৫ হাজার বাকি রেখে সব ভাড়া পরিশোধ করে দেন।
কিন্তু গত ২২ ফেব্রুয়ারি অঞ্জনা বেগমের হয়ে বাগাতিপাড়া থানার ওসিসহ অন্যান্য কর্মকর্তা নিজামকে থানায় ডেকে নিয়ে আটকে রাখেন। একপর্যায়ে মারধর করে তাঁকে দিয়ে ৩টি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে মর্মে সই করিয়ে নেন।
এরপর টাকা না দিতে পারায় তাঁরা ২৫ ও ২৭ মার্চ তাঁকে (নিজাম) আবার আটক করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। তখন ব্যবসা করতে না দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। হুমকির কারণে বর্তমানে ব্যবসা বন্ধ করে তিনি বেকার জীবন যাপন করছেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাজু আহমেদ মামলাটি দায়েরের বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে পুলিশ সুপার এবং পিবিআইকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। আগামী ১৮ মে মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে বাদীর আইনজীবী মসলেম উদ্দিন জানান, তাঁর মক্কেল আসামিদের জুলুমের শিকার হয়েছেন বলে মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন।
মামলার বিষয়ে বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।’
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পাওয়ার ট্রিলারের ভাড়ার ব্যাপারে আমার কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর আমি আপস-মীমাংসার চেষ্টা করেছি মাত্র। বাদীকে জুলুম করা বা তাঁর কাছে টাকা দাবি করার অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।’