মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : গৃহবধূ হত্যা মামলায় ২ আসামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একইসাথে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ২ বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সাইফুল ইলাহী বুধবার (২৬ এপ্রিল) এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত আসামীদ্বয় হচ্ছে-তৎকালীন চকরিয়া উপজেলা (বর্তমানে পেকুয়া উপজেলা) এর রাজাখালীর রব্বত আলী মাতবর পাড়ার জামাল উদ্দিনের পুত্র রুহুল আমিন এবং আবদুল মালেকের স্ত্রী খালেদা বেগম। রায় ঘোষণার সময় আসামীদ্বয় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট সুলতানুল আলম।
একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মফিজুর রহমান মফিজ ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
১৯৯৫ সালের ২৬ জানুয়ারী সংগঠিত হত্যাকান্ডে নিহত গৃহবধূ হলেন- চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পশ্চিম পুঁইছড়ি গ্রামের বদিউল আলমের কন্যা রোজিনা আক্তার প্রকাশ রোজি। ঘটনার ২৮ বছর পর মামলাটির রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
১৯৯৫ সালের ২৬ জানুয়ারী রাত ১১ টার দিকে গৃহবধূ রোজিনা আক্তার প্রকাশ রোজি-কে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের দাবীতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূ রোজিনা আক্তার প্রকাশ রোজি’র পিতা বদিউল আলম বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার চকরিয়া থানা মামলা নম্বর : ২৪(১)/৯৫, জিআর মামলা নম্বর : ২৪/১৯৯৫ ইংরেজি এবং এসটি মামলা নম্বর : ১৬/২০০০ ইংরেজি।
বিচার ও রায়
মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) রুহুল আমিন, খালেদা বেগম, আবদুল মালেক, হাবিবুর রহমান, আবদুল গণি ও আবদুর রহমানের বিচার প্রার্থনা করে আদালতে চার্জশীট (অভিযোগপত্র) প্রদান করে।
মামলাটি বিচারের জন্য চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, সুরতহাল প্রতিবেদন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও আলামত পর্যালোচনা, আসামীদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ সকল বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য করা হয়।
রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সাইফুল ইলাহী মামলার আসামী রুহুল আমিন ও খালেদা বেগম-কে ১৮৬০ সালের ফৌজদারী দন্ড বিধির ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একইসাথে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ২ বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন।
মামলার আসামী আবদুল মালেক ইতিমধ্যে মৃত্যুবরন করায় তাকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং অন্যান্য আসামীদের বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। এ রায়ের মাধ্যমে ঘটনার দীর্ঘ ২৮ বছর পর মামলাটি নিষ্পত্তি করা হলো।