৩৪ বছর আগে বনকর্মী হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদন্ড, ৩ জনের যাবজ্জীবন
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত, কক্সবাজার

৩৪ বছর আগে বনকর্মী হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদন্ড, ৩ জনের যাবজ্জীবন

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : প্রায় ৩৪ বছর আগে বনকর্মী হত্যা মামলায় রায়ে একজনের মৃত্যুদন্ড, ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। যাবজ্জীবন দন্ডিত ৩ জন আসামীকে একইসাথে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদয়ে আরো ২ বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সাইফুল ইলাহী সোমবার (১৫ মে) এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদন্ড দন্ডিত আসামী হলেন- কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং এর এজহারুল হকের পুত্র এনামুল হক। মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত আসামী এনামুল হক পলাতক রয়েছে।

আর যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত আসামীরা হলেন একই এলাকার এজহারুল হকের পুত্র কামাল হোসেন, মাহমুদুর রহমানের পুত্র ইউনুস ও শামসুল আলমের পুত্র নুরুল আলম নুরু। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট সুলতানুল আলম মামলাটি পরিচালনা করেন।

একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মফিজুর রহমান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

১৯৮৯ সালের ৭ জুলাই সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে কক্সবাজারের তৎকালীন চকরিয়া উপজেলার (বর্তমানে পেকুয়া উপজেলা) টৈটং বাজারের সন্নিকটে একটি স্কুলের মাঠ থাকা বন বিভাগের জব্দকৃত কাঠ সশস্ত্র আসামীরা সংঘবদ্ধভাবে লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় বনকর্মী মিয়াজান তাদের বাঁধা দিলে আাসামীরা মিয়াজান’কে গুলি করে হত্যা করে।

এ ঘটনায় হাকিম আলীর পুত্র মোহাম্মদ এহসান বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার চকরিয়া থানা মামলা নম্বর : ৯(৭)/১৯৮৯ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর ১০২/১৯৮৯ ইংরেজি এবং এসটি মামলা নম্বর : ৮৩/১৯৯৪ ইংরেজি।

বিচার ও রায়

মামলাটি বিচারের জন্য চার্জ গঠনের পর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা দ্বিতীয় আদালতে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা, অন্যান্য আলামত প্রদর্শন, আসামীদের পক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে মামলাটি রায়ের জন্য সোমবার (১৫ মে) দিন ধার্য করা হয়।

রায়ের দিনে বিচারক মোহাম্মদ সাইফুল ইলাহী ফৌজদারি দন্ডবিধির ৩০২ ও ১৪৯ ধারায় আসামীদের দোষী সাব্যস্থ করে মামালটির উপরোক্ত রায় ঘোষণা করেন।

মামলার অন্যান্য আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। ঘটনার দীর্ঘ প্রায় ৩৪ বছর পর মামলাটির রায় ঘোষণা করা হলো।