মামলা ফাইলিংয়ের চেয়ে নিষ্পত্তির হার বেড়েছে : প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী

আইনজীবীদের কাছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ চাইলেন প্রধান বিচারপতি

দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের কোনও সেক্টরে দুর্নীতি চলছে কিনা, তা নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনে কেউ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত আছেন, এমন কোনও প্রমাণ আইনজীবীদের কাছে থাকলে তা জানাতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি।

সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সন্ধ্যায় জাতীয় আইনি সহায়তা দিবস ২০২৩ উপলক্ষে উচ্চ আদালতে সরকারি আইনি সহায়তার অগ্রগতি শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি সভার আয়োজন করে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মেধাবী জুডিসিয়াল অফিসারদের সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনে নিয়ে এসেছি। কক্সবাজার থেকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে এসেছি। তাকে প্রধান করে দুর্নীতি রোধে একটি টাস্কফোর্স করেছি। তাদের নির্দেশনা দিয়েছি সুপ্রিম কোর্টের কোনও সেক্টরে দুর্নীতি চলছে কিনা, তা নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগের কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, তথ্য-প্রমাণ যদি আমার কাছে আসে, আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এক মিনিটও অপেক্ষা করবো না। সে যত উচ্চপদস্থ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা হোক বা সুপ্রিম কোর্টর কর্মচারীই হোক। তার বিরুদ্ধে প্রসিডিং শুরু করতে একমুহূর্ত অপেক্ষা করবো না।

তিনি বলেন, কিন্তু যদি কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না আসে, তাহলে কীসের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নেবো? যখন কারও দুর্নীতি হাতেনাতে ধরা হয়েছে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।

উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনে যদি দুর্নীতির সঙ্গে কেউ জড়িত হন, কোনও প্রমাণ থাকলে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবো না।

লিগ্যাল এইডের কার্যক্রমের প্রশংসা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারপ্রার্থীদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সারা দেশের লিগ্যাল এইড অফিসারদের পারফরম্যান্স আশাব্যঞ্জক। লিগ্যাল এইডের কার্যক্রমকে যদি জোরদার করা যায়, তাহলে মামলাজট ধীরে ধীরে কমে আসবে।

এ সময় আইন পেশাকে মানুষের সেবার করা বড় সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে আইনজীবীদের গরিব মানুষকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়ার কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি নাইমা হায়দারের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান প্রমুখ।

এ সময় অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ সাইফুর রহমান, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুন্সি মো. মশিয়ার রহমানসহ সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা এবং সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের কর্মকর্তা ও প্যানেল আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।