শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যদের এক পক্ষের ডাকা কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছেন অন্য পক্ষের আইনজীবীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হলে কর্মসূচিটি পণ্ড হয়ে যায়। জেলা আইনজীবী সমিতির সামনে রোববার (২৮ মে) এই ঘটনা ঘটে।
আইনজীবী সমিতির কল্যাণ তহবিলের টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদ, আত্মসাৎকারীদের শাস্তি ও টাকা ফেরতের দাবিতে ওই মানববন্ধন কর্মসূচি করেন আইনজীবীদের একটি অংশ। এতে নেতৃত্ব দেন আইনজীবী মুরাদ হোসেন মুন্সি।
তিনি বলেন, কল্যাণ তহবিলের টাকা আইনজীবীদের আমানত। তা আত্মসাতের ঘটনাটি গুরুতর অপরাধ। ওই টাকা আদায়ে সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি উদ্যোগে ঘাটতি রয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে না। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা পুনরায় আইনজীবী সমিতিতে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন। তাই সাধারণ আইনজীবীরা মিলে মানববন্ধন করেছেন। তাতে একটি পক্ষ বাধা দিয়েছেন।
আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমিতির সভাপতি আবু সাঈদের বিরুদ্ধে ওই তহবিলের এফডিআর ও সেটির লভ্যাংশের ১ কোটি ৯২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনেছে কার্যনির্বাহী কমিটি। আর তাঁকে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এই অভিযোগে গত ২৪ এপ্রিল সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আবু সাঈদ ও জহিরুল ইসলামের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়। জহিরুল ও সাঈদ সমিতির আগের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই ঘটনার দায় স্বীকার করে আবু সাঈদ আইনজীবী সমিতিতে চিঠি দেন।
তাতে তিনি দাবি করেন, টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জহিরুল ইসলাম যুক্ত নন। বিভিন্ন সময় নিজের প্রয়োজনে এফডিআরের টাকাগুলো তিনি নিজে খরচ করেছেন। আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বার কাউন্সিলে আপিল করেন জহিরুল ইসলাম। এরপর জহিরুলের বিরুদ্ধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা পুনরায় শুনানি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করে শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি।
এ বিষয়ে জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘টাকা আত্মসাৎ করেছেন আবু সাঈদ। তিনি তাঁর দায় স্বীকার করেছেন। এরপরও রাজনৈতিক কারণে একটি পক্ষ আমাকে হেয় করার জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাধ্য হয়ে আমি বার কাউন্সিলের শরণাপন্ন হয়েছি। বার কাউন্সিল শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন। সেই নথি আমি সমিতিতে পৌঁছে দিয়েছি। আমি যাতে চেম্বার ফিরে না পাই, তার জন্য একটি পক্ষ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। মানববন্ধনে কিছু আইনজীবী বাধা দিয়েছেন। ওই ঘটনার সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত নই।’
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, কল্যাণ তহবিলের আত্মসাৎ করা টাকা আদায়ের দাবিতে সাধারণ আইনজীবীরা মানববন্ধন করেছেন। তা করার অধিকার তাঁদের আছে। সেখানে যাঁরা হামলা করেছেন, বাধা দিয়েছেন, তা ঠিক করেননি। ঘটনাটি অত্যন্ত অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।