জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন ঢাকা জেলা প্রসাশক কার্যালয়ের উপ-প্রসাশনিক কর্মকর্তা শাহ আলম। আদালতের বাইরে হট্টোগোলের মধ্যেই এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (৩১ মে) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে এই সাক্ষীর জবানবন্দি নেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আগামী ১ জুন পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।
এদিন বেলা ৩টা ১০ মিনিট থেকে বেলা ৩টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত এ সাক্ষ্য গ্রহণ চলে। সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষ্যে বুধবার বেলা আড়াইটা থেকে বিএনপি দলীয় আইনজীবীরা ঢাকা মহানগর দায়রা জজের আদালত কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে মামলার বিচার বন্ধের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
আর আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা আদালত কক্ষের ভেতরে অবস্থান নিয়ে মামলার চলার পক্ষে স্লোগান দেয়। বেলা ৩টার দিকে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়।
তখন আদালত কক্ষের দরজার সামনে দুই পক্ষের আইনজীবীর মধ্যে ধাক্কাধাকির ঘটনা ঘটে।
এসময় আওয়ামী লীগ দলীয় আইনজীবীরা আদালত কক্ষের ভেতরে ও দরজায় অবস্থান নেয় এবং বিএনপি দলীয় আইনজীবীরা আদালতের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিচার বন্ধের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।
ওই অবস্থায় বেলা ৩টা ১০ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন এবং আদালতের পরিবেশ শান্ত করে বিচারকার্য পরিচালনায় সবাইকে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন।
সাক্ষ্য গ্রহণ চলাকালে দুইপক্ষই আদালত কক্ষের বাইরে একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। ওই অবস্থায়ই বেলা ৩টা ২৫ মিনিটে সাক্ষ্য শেষ হয়।
মামলায় এখন পর্যন্ত ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে ৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
গত ১৩ এপ্রিল তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। গত বছরের ১ নভেম্বর একই আদালত তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর গত ১৯ জানুয়ারি তাদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তার মা অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়।
২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরপরই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
পরবর্তীতে আবারও মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।