অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে ২০১২ সালের আগের কয়েক লাখ মামলা বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসাথে জেলা প্রশাসকরা অর্পিত সম্পত্তি লিজ দিতে পারবেন বলেও আদেশ দেয়া হয়েছে।
অর্পিত সম্পত্তি আইনের তিনটি (৯, ১৩ ও ১৪) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করে আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে বিচারপতি নায়মা হায়দার, বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি কুদ্দুস জামানের বৃহত্তর বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
এ রায়ের ফলে অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে অন্য আদালতগুলোতে চলমান সব মামলা বাতিল হয়ে যাবে। একইসঙ্গে এ আইনের সব মামলার বিচারকাজ এখন থেকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হবে। অন্য কোনো আদালতে এ সংক্রান্ত মামলা চলবে না বলে জানান আইনজীবীরা।
রায়ে আদালত বলেন, অর্পিত সম্পত্তি আইনের ৯, ১৩ এবং ১৪ ধারা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি নয়। অর্পিত সম্পত্তি জেলা প্রশাসকের অধীনে থাকবে এবং জেলা প্রশাসক প্রয়োজনে লিজ দিতে পারবেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত। তিনি জানান, ট্রাইব্যুনাল গঠনের আগে দেওয়ানী আদালতে অনিষ্পন্ন চলমান মামলাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করা হয়েছে। রায়ের ফলে অর্পিত সম্পতির মামলা শুধু ট্রাইবুন্যালে চলবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের সময় যারা এদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে যায়, তাদের সম্পত্তিকে শত্রু সম্পত্তি ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। পরে ১৯৭৪ সালে এসে সেসব সম্পত্তিকে অর্পিত সম্পত্তি করা হয়।
অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে প্রথম আইন হয় ২০০১ সালে। যা কার্যকর হয় ২০১২ সালে। সরকারের এই আইনের উদ্দেশ্য ছিলো প্রকৃত মালিকদের জমি ফেরত দেয়া। কিন্তু এর আগেই অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে লাখ লাখ মামলা হয়।
এদিকে, ২০১২ সালে অর্পিত সম্পত্তির ৩টি সেকশন চ্যালেঞ্জ করে ২টি রিট দায়ের করা হয়। রিটের চূড়ান্ত শুনানিতে আইনি ব্যাখ্যার প্রয়োজন হলে ৩ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। সেই রিটের চূড়ান্ত শুনানিতে হাইকোর্ট ২০১২ সালের আগে হওয়া অর্পিত সম্পত্তির লাখ লাখ মামলা বাতিল করে দিলেন।