অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ‘লিভ-ইন’ সম্পর্ক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্ট। দেশটির উচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, কোনও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়ে যদি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকে, তাহলে তা অনৈতিক এবং বেআইনি। এর অনুমতি আদালত দিতে পারে না বলে জানিয়ে দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
উনিশ বছর বয়সী সলোনি যাদবের সঙ্গে ‘লিভ-ইন’ সম্পর্কে ছিল ১৭ বছরের আব্বাস আলি। তারা তাদের সম্পর্কের বৈধতা চেয়ে ভারতের এলাহাবাদ হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে দ্বারস্থ হয়েছিল।
সেই মামলার প্রেক্ষিতেই বিচারপতি বিবেক কুমার বিড়লা এবং বিচারপতি রাজেন্দ্র কুমার পর্যবেক্ষণ দেন, কোনও লিভ-ইন সম্পর্ককে বৈবাহিক সম্পর্কের সমতুল্য মেনে নিতে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল, সম্পর্কের দু’জনকেই প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। অবশ্য তারা বিবাহযোগ্য বয়সের (ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছর) নাও হতে পারে। কিন্তু কোনও অপ্রাপ্ত বয়স্ক যুবক বা যুবতী যদি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকে, তাহলে তা অনৈতিক এবং বেআইনি।
আদালত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, কোনও প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণীর সঙ্গে যদি অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকে, তাহলে সেই ক্ষেত্রে সে সম্পর্কের সুরক্ষার জন্য আবেদন জানাতে পারে না। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ থেকে রেহাইও পেতে পারে না সেই ছেলে। কারণ তার কর্মকাণ্ড এমনিতেই বেআইনি।
প্রসঙ্গত, এই ক্ষেত্রে আব্বাসের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৩ ধারায় একটি মামলা রুজু হয়। এই আবহে আব্বাস এবং সলোনি আবেদন করে সেই এফআইআর খারিজের আবেদন জানিয়েছিল। তবে তাদের সেই আবেদন খারিজ করে দেয় এলাহাবাদ উচ্চ আদালত।
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, আব্বাস যেহেতু অপরাপ্ত বয়স্ক, তাই সে এখনও শিশু। আর কোনও শিশু লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে পারে না। এই আবহে আব্বাসের সম্পর্ককে রক্ষাকারী কোনও বিধান ভারতীয় আইনে নেই।
উচ্চ আদালত জানায়, লিভ-ইন সম্পর্কের বিরুদ্ধে দেশে কোনও আইন নেই। তবে তাই বলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনও ছেলেকে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার অনুমতি তো দেয়া যায় না। কারণ স্বভাবতই লিভ-ইন সম্পর্কে যৌনতা ও শারীরিক সম্পর্ক থাকতেই পারে এবং ভারতীয় আইন অনুযায়ী, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের যৌনতা অনুমোদিত নয়।
অবশ্য সাম্প্রতিককালে একাধিক ক্ষেত্রে অপ্রাপ্ত বয়স্ত ছেলে-মেয়েদের স্বেচ্ছায় যৌনতাকে ‘স্বীকৃতি’ দেওয়ার পক্ষে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে দেশটির বেশ কিছু হাইকোর্ট। তবে যখন আইন এখনও আগের মতোই রয়েছে, তাই ১৮ বছরের নীচের কেউ শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুললে তা বেআইনি বলেই ধরে নিতে হবে।