মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের পেকুয়ায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আসামি হয়েছেন সৌদি আরব প্রবাসী আজিজুল হক। অথচ তিনি ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর থেকে একটানা সৌদি আরবে রয়েছেন।
গত ১৫ আগস্ট বিকেলে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী’র গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় পুলিশের সাথে জানাজায় আগত মুসল্লিদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হন।
এ ঘটনায় পেকুয়া থানার এসআই মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা, দায়িত্ব পালনে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেন। তারমধ্যে, একটি মামলায় ১৫১ জনকে এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়।
আর এ মামলায় সৌদি প্রবাসী আজিজুল হককে এজাহারের ১৩২ নম্বর ক্রমিকের আসামী করা হয়েছে। অথচ আজিজুল হক ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর থেকে একটানা সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। একই মামলায় ১ হাজার ১০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী হওয়ার ব্যাপারে জানার পর আজিজুল হক সৌদি আরব থেকেই একটি লাইভ ভিডিও দিয়েছেন। ভিডিও ফুটেজটি ভাইরাল হয়ে গেছে। তাছাড়া, আজিজুল হক ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর থেকে সৌদি আরব থাকার প্রামাণ্য ডকুমেন্টস স্বরূপ পাসপোর্ট ও বিমানের টিকেটের ছবিও পাঠিয়েছেন গণমাধ্যমে।
সৌদি প্রবাসী আজিজুল হক কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ভারুয়াখালী এলাকার বজল আহমদের পুত্র।
প্রবাসী আজিজুল হক গণমাধ্যমকে সৌদি আরব থেকে সেলফোনে বলেন, “প্রায় ১০ মাস আগে থেকে আমি সৌদি আরবের জেদ্দায় আছি। সৌদি আরবে দিনমজুরি করে দেশে পরিবারের জন্য টাকা পাঠাই। একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসাবে সরকারের সহযোগিতা পাওয়ার কথা। কিন্তু উল্টো গত ১৫ আগস্ট পেকুয়ায় দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী’র গায়েবানা জানাজা নিয়ে পুলিশের সাথে সংগঠিত ঘটনায় পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় আমাকে এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়েছে। এজাহারে আমার নাম দেখে বিস্মিত হয়েছি।”
আক্ষেপের সাথে আজিজুল হক বলেন, “কি একটা অবস্থা! প্রবাস জীবনে এসেও পুলিশের মামলা থেকে রেহাই পাচ্ছি না। মামলার কথা শুনে বাড়িতে আমার বৃদ্ধ মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। জানিনা কি হয়।”
এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার বলেন, বিদেশে অবস্থান করা কেউ গত ১৫ আগস্ট সংগঠিত ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অন্তর্ভুক্ত থাকলে তদন্ত করে আদালতে চার্জশীট দেওয়ার সময় তাদের অবশ্যই বাদ দেওয়া হবে।