ভুক্তভোগীকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বললেন সুপ্রিম কোর্ট
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী

আইনজীবীদের হট্টগোলে এজলাস ছাড়লেন বিচারপতিরা

তারেকের বক্তব্য সরানোর নির্দেশ

হাইকোর্টে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোলের মধ্যে এজলাস ছাড়লেন বিচারপতিরা। এসময় কোর্টে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দেয়াকে কেন্দ্র করে আজ সোমবার (২৮ আগস্ট) সকালে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।

এক পর্যায়ে বিচারপতিরা এজলাস ছেড়ে খাস কামরায় চলে যান। বিচারপতিরা চলে যাওয়ার সময় বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা শেইম-শেইম বলে চিৎকার করতে থাকেন।

এদিন অনলাইন থেকে তারেক রহমানের বক্তব্য সরাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দেন। এসময় আইনজীবীরা হট্টগোল এবং হইচই শুরু করেন।

এতে প্রয় আধা ঘণ্টা কোর্টে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে বিচারপতিরা এজলাস ছেড়ে খাস কামরায় চলে যান।

তারেক রহমানের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরানের আবেদন গ্রহণের প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের পক্ষের আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করেন।

একপর্যায়ে তারেক রহমানের আইনজীবীরা আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার প্রতি আমাদের অনাস্থার বিষয়টি প্রধান বিচারপতির বরাবর দিয়েছি। এই অবস্থায় আপনি এবিষয়ে আদেশ দিতে পারেন না। এসময় তারা ‘শেইম’ ‘শেইম’ বলে চিৎকার করেন। এছাড়া বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, ‘আপনি অবিচার করতে পারেন না।’

এসময় আদালতে থাকা আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা তারেকের পক্ষের আইনজীবীদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে আদালতের দুই বিচারপতি এজলাস ছেড়ে খাস কামরায় চলে যায়।

এরপরও দুই পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে অবস্থান করেন। পরবর্তীতে এজলাস কক্ষের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আইনজীবীদের হট্টগোলে এজলাস ছাড়লেন বিচারপতিরা
এজলাস কক্ষের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন

আদালতে আজ রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম, আইনজীবী সানজিদা খানম ও আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী লিনাসহ আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা।

অন্যদিকে তারেক রহমানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা।

সাড়ে আট বছর শুনানি না হওয়া রুলটি রিটকারিদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি শুনানির আবেদনের প্রেক্ষাপটে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির কার্যতালিকা আসে।

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যের অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান (ওই সময়ের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান) তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ২০১৫ সালে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী লিনা।

সে রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চ রুল জারিসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন।

হাইকোর্টের রুলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, একুশে টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও তারেক রহমানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

অন্যদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে হাইকোর্ট তারেক রহমানের অবস্থান জানাতে পররাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ মহাপরিদর্শককে তারেক রহমানের পাসপোর্টের মেয়াদ জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

পরবর্তীতে ঠিকানা ভুলের প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান বাদে রিট আবেদনের অন্য সকল বিবাদীদের বরাবর রুলের নোটিশ জারি হয়। অবশেষে সাড়ে আট বছর পর শুনানি না হওয়া সেই রুল শুনানির জন্য গত ২ আগস্ট আবেদন করেন রিটের পক্ষের আইনজীবী কামরুল ইসলাম।