শিশুদের মামলা শুনানির জন্য সপ্তাহের একটি দিন নির্ধারণ করেছে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২। এখন থেকে উক্ত ট্রাইব্যুনালে প্রত্যেক সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস অর্থাৎ বৃহস্পতিবার আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশুর মামলাগুলোর বিচার চলবে।
নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার এদিন ধার্য করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায় যে, এই আদালতে ২৪৭টি শিশু মামলা বিচারাধীন আছে। আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু’র মামলাগুলো গভীর মনোযোগ, শিশুদেরকে পর্যাপ্ত সময় দেয়া ও তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানের জন্য বিচারক এই দিন ধার্য করেন।
এই বিষয়ে জেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ সাইদুর রহমান জানান, শুধু শিশুদের জন্য একটি দিন নির্দিষ্ট হলে আদালত পর্যাপ্ত সময় দিতে পারবেন। আমরাও একটি দিন আদালতে উপস্থিত থেকে শিশুদের এই মামলাগুলো দায়িত্ব সহকারে খোঁজ খবর নিতে পারবো।
এই আদালতে নিযুক্তিয় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোঃ মকবুল হোসেন জানান, শিশুদের জন্য এজলাস কক্ষ ব্যতিরেকে শিশুদের জন্য পৃথক বিচার করার নির্দেশনা থাকলেও স্থান ও প্রশাসনিক অপ্রতুলতার কারণে এতদিন বয়স্ক আসামীদের সাথে শিশুদের মামলাগুলো বিচার হতো। এখন থেকে শিশু মামলাগুলোর দিন নির্দিষ্ট হওয়ার কারণে আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশুদের মামলাগুলো গুরুত্ব সহকারে বিচারকার্য পরিচালনা করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খোদাদাদ খান জানান, নানা রকম উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তি ও উৎকর্ষতার মাধ্যমে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২ এর বিচারক নারী ও শিশু সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। শিশুদের জন্য আলাদা দিন নির্ধারণ হলে বিচার প্রার্থী শিশুরা বয়স্ক আসামীদের সাথে একই দিনে বিচারের সম্মুখীন হবেন না। আইনজীবীরাও একটা মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে শিশু মামলাগুলো পরিচালনার সুযোগ পাবে বলে আমি মনে করি। আদালতের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।
বদলগাছী উপজেলার আনিছুর রহমান নামে একজন বিচারপ্রার্থী জানান, আদালতের এরকম সিদ্ধান্ত নি:সন্দেহে আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশুদের উৎসাহ যোগাবে। শুধুমাত্র একদিন শিশুদের বিচারের দিন নির্ধারিত থাকলে ট্রাইব্যুনালের বয়স্ক আসামীদের নানান বিষয়ে ঘৃণ্য অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়টি শিশুদের উপর প্রভাব পড়বে না। এমন সিদ্ধান্ত শিশুদের মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং সুস্থ বিচারিক ধারা ফিরে আনবে বলে উক্ত বিচারপ্রার্থী জানান।