আদালত অবমাননার মামলায় অধস্তন আদালতের বিচারক মো. সোহেল রানাকে সাজা দেয়ায় মর্মাহত হয়েছেন অধস্তন আদালতের বিচারকরা। তাঁদের প্রত্যাশা অভিভাবক হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট ভুলভ্রান্তিগুলো নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিবেচনা করে সংশোধনের সুযোগ দেবেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে এক বৈঠকে এই মর্মাহতের বিষয়টি জানান অধস্তন আদালতের বিচারকদের সংগঠন জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। রাজধানীর বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে গত বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) রাতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিচারকরা আইনমন্ত্রীকে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আমাদের অভিভাবক। আমরা বিচার বিভাগের সদস্য। সংবিধান ও আইনের আলোকে বিচার কাজ করাই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সময় আমাদের ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অভিভাবক হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট আমাদের ভুলভ্রান্তিগুলো নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিবেচনা করে সংশোধনের সুযোগ দেবেন সেটাই প্রত্যাশা করি, যাতে করে ভবিষ্যতে দায়িত্ব পালনে আমরা সচেষ্ট হতে পারি।’
বৈঠকে উঠে আসা বিভিন্ন প্রস্তাব প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করা হবে বলে বিচারকদের আশ্বাস দেন আইনমন্ত্রী।
বৈঠকে আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এএইচএম হাবিবুর রহমান, মহাসচিব ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানসহ প্রমুখ বিচারকরা উপস্থিত ছিলেন।
আদালত অবমাননার মামলায় কুমিল্লার সাবেক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত) মো. সোহেল রানাকে এক মাসের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। যদিও জেল-জরিমানার দণ্ডের তিন ঘণ্টা পর তাকে এক মাসের জামিন দেয়া হয়।
আদালত অবমাননার রুল নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, একটি ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ৫৬১ (এ) ধারার ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছিলেন আদালত। পরবর্তী সময়ে এ আদেশের কপি কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানার কাছে যায়।
তিনি হাইকোর্টের ওই আদেশ অমান্য করে বিচার কাজ চালিয়ে যান। এ কারণে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হয়। এই আদেশ অমান্যের কারণে তাকে সাজা দেয়া হয়।